ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা করে বিদেশ পালিয়ে গেলেও পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পেল না নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় স্কুলছাত্রী মোনালিসা আক্তার হত্যাকাণ্ডের মামলার আসামি আবু সাঈদ (২২)। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে তাকে গ্রেফতার করে দেশে আনছে পুলিশ। আসামি সাঈদ ফতুল্লা পশ্চিম দেওভোগ বড় আমবাগান এলাকার ইকবাল হোসেনের ছেলে।
আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর তাকে দেশে আনা হবে বলে জানিয়েছেন ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের। এর আগে তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দুবাই থেকে গ্রেফতার করা হয়।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের জানান, গত ১৭ সেপ্টেম্বর ইন্টারপোলের মাধ্যমে আসামি সাঈদকে দুবাইয়ে গ্রেফতার করা হয়। পরে সব প্রক্রিয়া শেষে আগামী রবিবার দেশে আনা হবে। তারপর এ মামলার আইনি কার্যক্রম শুরু হবে।
জানা যায়, ঘটনার তিন মাস আগে সাঈদ বিয়ে করার জন্য দুবাই থেকে বাংলাদেশে আসেন। পরে পাশের বাড়ির শাহিন বেপারীর মেয়ে মোনালিসাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সাঈদের পরিবার। কিন্তু মেয়ের বয়স অল্প হওয়ায় সাঈদের প্রস্তাবে রাজি হননি মোনালিসার পরিবার। পরে সাঈদ পাশের এলাকার ইভা নামে এক মেয়েকে বিয়ে করেন।
২ ফেব্রুয়ারি মোনালিসা ও তার ছোট ভাই সাহেদকে বাড়িতে রেখে সকালে বাবা শাহিন বেপারী স্ত্রীকে নিয়ে নরসিংদী শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যান। সে সময় বাড়িতে একা পেয়ে মোনালিসাকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন সাঈদ। পরে ঘটনাকে আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দিতে লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেন।
ঘটনার পর আবু সাঈদ দুবাই পালিয়ে যান বলে পরিবার সূত্রে জানা যায়। অগ্রিম রিটার্ন টিকেট থাকায় পালিয়ে যেতে কোনো বেগ পেতে হয়নি তার। নিহত মোনালিসা হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তার বাবা শাহীন বেপারী একজন ব্যবসায়ী।
ওই দিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বাবা শাহিন বেপারী জানিয়েছিলেন, বিকেলে তার বাড়ির ভাড়াটিয়া তাকে ফোন করে জানান অজ্ঞাত এক যুবক তার ঘরে প্রবেশ করে কিছুক্ষণ পর বের হয়ে যায়। পরে সন্ধ্যার দিকে মোনালিসার ছোট ভাইয়ের চিৎকার শুনতে পায়। তারা গিয়ে দেখতে পান মোনালিসা ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ঝুলে আছে। ঘরে প্রবেশ করে ওই ভাড়াটিয়া ও তার ছোট ছেলে ওড়না কেটে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নিচে নামিয়ে মোনালিসাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
মোনালিসার ছোট ভাই শাহেদ জানায়, ঘটনার দিন বিকেলে পানি পান করার কথা বলে ঘরে ঢোকেন সাঈদ। পরে কৌশলে শাহেদকে খেলতে বাইরে পাঠিয়ে দেন। সন্ধ্যায় শাহেদ বাসায় ফিরে দেখে মোনালিসা ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে।