Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০১ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৫ | ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

৯ বছরে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে ৬৬ শতাংশ: নারায়ন চন্দ্র চন্দ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:৩৬ PM
আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:৩৬ PM

bdmorning Image Preview
ফাইল ছবি


নিজস্ব প্রতিবেদক

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ জানিয়েছেন, মাত্র ৯ বছরের ব্যবধানে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৬৬ শতাংশ। প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৩১ শতাংশ মানুষ মৎস্যখাতে জড়িত এবং ১১ শতাংশের অধিক লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এর ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের মোট উৎপাদিত মাছের প্রায় ১২ শতাংশ আসে শুধু ইলিশ থেকে। দেশের জিডিপিতে ইলিশের অবদান এক শতাংশের অধিক। কাজেই একক প্রজাতি হিসেবে ইলিশের অবদান সর্বোচ্চ।

আজ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকদের নিজ দফতরে সাক্ষাৎকারের সময় মন্ত্রী এসব তথ্য জানান।

মন্ত্রী বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২.৯৮ লক্ষ মে.টন, যা বৃদ্ধি পেয়ে বিগত ৯ বছরে প্রায় ৫ লক্ষ মে. টনে উন্নীত হয়েছে, যার র্বতমান বাজারমূল্য প্রায় ১৮,০০০ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের ব্যাপক উদ্যোগের ফলেই মৎস্যখাতে অভূতপূর্ব উন্নতি হওয়ায় দেশ আজ মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পেরেছে। এক্ষেত্রে ইলিশমাছের ভূমিকাও উল্লেখযোগ্য। বিশ্বে ইলিশের উৎপাদনে বাংলাদেশ যেমন প্রথমস্থানের অধিকারী তেমনই আমরা একাই ৭০-৭৫ ভাগ ইলিশ উৎপাদন করে থাকি। এসময়ে সার্বিক মাছের উৎপাদনও ২৭.০১ লাখ মেঃ টন থেকে বেড়ে ৪১.৩৪ লাখ মেঃ টনে উন্নীত হয়েছে। এটি ২০১৬-১৭ সালের উৎপাদন-লক্ষ্যমাত্রা ৪০.৫০ লক্ষ মেট্রিক টনের চেয়ে ৮৪ হাজার মেট্রিক টন বেশি। তাই ২০১৭-১৮ সালে ইলিশের উৎপাদন যেমন ৫ লক্ষ টন ছাড়িয়ে যাবে তেমনই মাছে উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়ে ৪২.৭৭ লক্ষ মে.টন হবে বলে আশা করা যায়।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও আইনানুগ কার্যক্রমশেষে বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশের ভৌগোলিক নিন্ধন (জিআই সনদ) প্রদান করেন। বাংলাদশেরে জাতীয় মাছ ইলিশের ভৌগোলিক নিবন্ধন সম্পন্নের ফলে বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও গুণগত মানসম্পন্ন ইলিশ বাজারজাতকরণের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে বাণিজ্যিকসহ অন্যান্য সুবধিা পাওয়া যাবে। ইতিপূর্বে ইলিশের কোনো ব্র্যান্ডিং ও ট্রেডমার্কও ছিল না। বিশ্বে ইলিশের ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশেই সর্বপ্রথম সম্পন্ন হয়েছে। ফলে বিদেশের ক্রেতারা এখন সহজেই বাংলাদশি সুস্বাদু ইলিশমাছ শনাক্ত করতে পারবেন। সরকার স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ইলিশের ভ্যালু-অ্যাডেড পণ্যের চাহিদার প্রেক্ষিতে ইলিশের স্যুপ, নুডলস ও পাউডার তৈরির প্রযুক্তি আবিষ্কার করে ইতিমধ্যেই তা বাজারজাতও শুরু করেছে।  

মন্ত্রী বলেন, সামাজিক নিরাপত্তার্কমসূচির আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে জাটকাসমৃদ্ধ ১৭ জেলার ৮৫টি উপজেলায় জাটকা আহরণে বিরত রাখতে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৩জন জেলে পরিবারকে মাসিক ৪০ কেজি হারে ৪ মাসের জন্য মোট ৩৮,১৮৭.৬৮ মে. টন এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২,৪৮,৬৭৪টি জেলেপরিবারের প্রতিপরিবারকে মোট ৩৯,৭৮৮.০০ টন চাল প্রদান করা হয়েছে। অথচ ২০০৪-০৫ থেকে ২০০৭-০৮ পর্যন্ত এ খাদ্যসহায়তা প্রদান করা হয়েছে মাত্র ৬,৯০৬ টন। অপরপক্ষে ২০০৮-০৯ থেকে ২০১৬-১৭ র্অথবছর র্পযন্ত মোট ২,৭৪,৫৪৫ টন খাদ্যসহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ২০০৪-০৫ থেকে ২০০৭-০৮ সাল পর্যন্ত জাটকা আহরণ নিষিদ্ধিকালীন পরিবারপ্রতি মাসিক ১০ কেজি হারে খাদ্য দেয়া হলে বর্তমানে ৪০ কেজি হারে খাদ্যসহায়তা প্রদান হচ্ছে। তা ছাড়া ২০০৭-০৮ সালে ১,৪৫,৩৩৫টি জেলেপরিবার এ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত থাকলেও বর্তমানে পরিবারসংখ্যা ২,৪৮,৬৭৪টিতে উন্নীত হয়েছে। ২০০৮-০৯ সালে ক্ষমতাগ্রহণের পূর্বের ৭ বছরে জেলেদের জন্য খাদ্যশস্য বরাদ্দ ছিল মাত্র ৬,৯০৬ মে. টন। কিন্তু  বিগত ২০১৬-১৭ সাল পর্যন্ত ৯ বছরে এ সহায়তা দেয়া হয়েছে ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৫৪৫ মেট্রিক টন। বর্তমান সরকারের আমলে প্রকৃত জেলেদের সনাক্ত করে নিবন্ধকরণ ও পরিচয়পত্র প্রদানের লক্ষ্যে জুন ২০১৭ পর্যন্ত ১৬ লক্ষ ২০ হাজার মৎস্যজীবী-জেলেদের নিবন্ধন ও ডাটাবেইজ প্রস্তুত এবং ১৪ লক্ষ ২০ হাজার জেলের পরিচয়পত্র বিতরণ সম্পন্ন করে সরকার ইলিশসহ মাছের উৎপাদনবৃদ্ধিতে বাস্তনমুখী অবদান রেখে চলেছে। এরমধ্যে ইলিশ আহরণে জড়িত প্রায় ৭ লাখ জেলে এবং মা-ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালে ২২দিনের জন্য ৩ লাখ ৯৫ হাজার জেলেপরিবারের প্রতিপরিবাকে ২০ কেজি হারে  প্রায় ৭ হাজার টন খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়ে থাকে।

বলাবাহুল্য যে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৬৮,৩০৫.৬৮ মে.টন মৎস্য ও মৎস্যপণ্য রপ্তানি করে ৪২৮৭.৬৪ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে, যা ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ছিল ৩২৪৩.৪১ কোটি টাকা।

Bootstrap Image Preview