গাজীপুরের টঙ্গীতে ন্যাশনাল ফ্যান কারখানার বয়লার বিস্ফোরণে দুই শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময় দগ্ধ হয়েছেন আরও ২০ জন।তাৎক্ষণিক হতাহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার পৌনে ১২টার দিকে টঙ্গীর বিশফিট শিল্পনগরী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. আতিকুর রহমান বলেন, সকালে টঙ্গীর বিসিক শিল্প এলাকায় ন্যাশনাল ফ্যান কারখানায় হিট মেশিনের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় আধা ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নেভান।
ন্যাশনাল ফ্যান কারখানার কর্মচারী আবদুল রহীম জানান, প্রতিদিনের মতো আজ কারখানায় সকালে এসে কাজ শুরু করি। হঠাৎ বেলা পৌনে ১২টার দিকে কারখানার বয়লার বিস্ফোরিত হয়। এখন পর্যন্ত দুই শ্রমিকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় দগ্ধ হয়েছেন আরও ২০ শ্রমিক। তাদের উদ্ধার করে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।
টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি কামাল হোসেন জানান, এ ঘটনায় দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানান ওসি।
টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক মাসুদ রানা জানান, ন্যাশনাল ফ্যান কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে দুইজন নিহত এবং ৪২ জন দগ্ধ হয়েছেন। এদের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা, ১০ জনকে ভর্তি এবং আটজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনায় দগ্ধ সাতজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তারা হলেন- কারখানার কর্মচারী কবির (২০), লাল চাঁন (২০), রনি (২০), রিপন (১৭), আসিফ (১৬), তানজিনা (১৮) ও কাকলী (১৬)। তাদের সবারই অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
ঢামেক হাসপাতাল বার্ন ইউনিটের এক চিকিৎসক বলেন, কবিরের শরীরের শতভাগ দগ্ধ ও লাল চাঁনের মাথায় আঘাত রয়েছে। তাদের দুইজনের অবস্থা অনেক বেশি খারাপ। তাছাড়া বাকি পাঁচজনের অবস্থাও গুরুতর। সবাইকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে ২০১৬ সালে ১০ সেপ্টেম্বর গাজীপুরে টঙ্গীর বিসিক শিল্প এলাকায় টাম্পাকো ফয়লস লিমিটেড নামের একটি প্যাকেজিং কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।এতে পাঁচ তলা ভবনটি পুরোপুরি ধসে পড়ে। বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে ও চাপা পড়ে অন্তত ২৪ জন নিহত হয় এবং আহত হয় অর্ধশতাধিক মানুষ।