১৯২৭ সালের ১লা আগস্ট জন্ম ছলেমা খাতুনের। বর্তমানে তার বয়স ৯১ বছর। বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন বৃদ্ধা ছলেমা খাতুন। জীবন যেন আর চলে না। প্রতি মুহুর্ত অন্যের উপর নির্ভর করে পার হচ্ছে বার্ধক্যের শেষ সময়। তার উপরে দারিদ্রের করালগ্রাস মহামারির মত আকঁড়ে ধরেছে। আর্থিক অভাব-অনটনে থাকায় অন্ন, বস্ত্র ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে না পেরে দুর্বিসহ মানবেতর জীবন ধারন করছেন। এমন করুণ অবস্থায় পাচ্ছে না সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা। বয়স্কদের জন্য বর্তমান সরকারের অন্যতম উপহার বয়স্কভাতাও জুটেনি তার কপালে।
বলছিলাম লামা উপজেলার পাশ্বর্বর্তী ছিটমহল খ্যাত চকরিয়ার বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম পাড়ার এলাকার মৃত নুর আহমদ এর স্ত্রী ছলেমা খাতুনের কথা।
লোকমুখে বৃদ্ধ ছলেমা খাতুনের মানবেতর জীবন যাপনের কথা শুনে সরজমিনে তাকে দেখতে যাই। জরাজীর্ণ একটি কুঁড়ে ঘরের একছালায় বিছানা করে মাটিতে পড়ে আছেন তিনি। গায়ে ময়লা জীর্ণ কাপড়। বয়সের ভারে ভাল করে কথা বলতে পারেননা। পৈত্রিক ও স্বামীর সূত্রে পাওয়া সকল সম্পত্তি ছেলে-মেয়েদের ভাগ করে দিয়েছেন। এমনকি মসজিদের জন্যও তিনি জায়গা দান করেছেন। ছেলের টানাপোড়া সংসারে খেয়ে না খেয়ে আছেন ছলেমা। ভাঙ্গা কন্ঠে বলেন, ছেলে দিনমজুরী করে। তার সামান্য আয়ে সবাইকে নিয়ে কোনরকম বেঁচে আছি। সবাই বয়স্কভাতা পায়। আমি পাইনা ? তিনি প্রশ্ন করেন, আমার বয়স্কভাতা পাওয়ার সময় কি এখনও হয়নি ?
ছলেমা খাতুনের ছেলে শাহ আলম বলেন, আমার মায়ের চেয়ে বয়সের ছোট অনেকে বয়স্কভাতা পায়। আমার মা পায়না। আমরা গরীব মানুষ। ভাতা পেলে মাকে চিকিৎসা করাতে পারতাম। স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারদের অনেকবার বলেছি। তারা আমার মাকে বয়স্কভাতা দেয়নি। গরীবের দিকে নজর দিতে সরকারের কাছে আবেদন করছি।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার আহাম্মদ হোসেন বলেন, সামনে নতুন বয়স্কভাতা দেয়া হলে ছলেমা খাতুনকে দেয়া হবে।
এই বিষয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিবলী নোমান বলেন, উপজেলা সমাজ সেবা অফিসারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য এবং বয়স্ক মহিলাটিকে তার ছেলে দিয়ে আমার কাছে পাঠিয়ে দেন। তার বয়স্কভাতা প্রদানের সকল দায়িত্ব আমার। বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের দফাদারকে বাড়ি গিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করে আমার অফিসে জমা দেওয়ার জন্য নিদের্শনা দিয়েছি।