আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর ২১ বছর বিচার বিভাগের স্বাধীনতা দূরে থাক বিচার পাওয়ার মতো কথা বলার সাহস আমাদের ছিল না। বিচার পাওয়ার নিশ্চয়তা ছিল না এবং ছিল না বিচারিক আদালতের কাছে যাওয়ার। আমরা অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে কিন্তু এখানে পৌঁছেছি।
আজ (০৪ নভেম্বর) ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের জন্য আয়োজিত তৃতীয় অরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০০৭ সালের পূর্বে আজকের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসি কিন্তু কমবেশী প্রশাসনের সাথে যুক্ত ছিল। তখন একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে একই সঙ্গে নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের কাজ করতে হতো। ফলে বিচারপ্রার্থীদের বিচার পেতে ভোগান্তিতে পরতে হতো। সেজন্য বিচার বিভাগ আলাদা করে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদেরকে এখন সস্পূর্ণ জুডিসিয়াল কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসি তৈরি করার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু অবকাঠামো তৈরির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় এবং সে সময় ম্যাজিস্ট্রেটরা এজলাস ভাগাভাগি করে বিচারকার্য সম্পাদন করতো। বর্তমান সরকার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসির জন্য এইসব অবকাঠামো তৈরি করে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, মাজদার হোসেনের মামলা দিয়ে কিন্তু বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয় নাই। ওই সময় জনগণের দাবী এমন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল যে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ আলাদা না করা হলে বিচার ব্যবস্থা ব্যর্থ হবে। সেজন্যই কি ‘ বিচার বিভাগ আলাদা করা হয়েছে এবং যাতে বিচারকরা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে বিচারকাজ করতে পারেন। বিচারকরা যাতে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে বিচারকাজ করতে পারে সেজন্য তাদের বেতন-ভাতা দ্বিগুণ করা হয়েছে। বিচারকদের বিদেশে প্রশিক্ষণে পাঠানো হচ্ছে এবং বর্তমান সরকারের আমলেই প্রথম বিচারকদের বিদেশে প্রশিক্ষণে পাঠানো হয়েছে। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে তাদের যুযোপযোগী প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
গণমাধ্যমে এসেছে সমঝোতা হলে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব। এই অবস্থায় তার মুক্তি সম্ভব কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়েছে আদালত তাই তার কারামুক্তির বিষয়ে আদালতই সিদ্ধান্ত দেবেন।
ঐক্যফ্রন্টের দাবি অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ পেছানো হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা নির্বাচন কমিশন বিবেচনা করবে।
তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস সংবিধানে যেটা আছে সেই অনুপাতে নির্বাচন কমিশন তার সিদ্ধান্ত নিবে।
নির্বাচনকালীন সময়ে ঐক্যফ্রন্টের কাউকে সরকারে রাখার সিদ্ধান্ত আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ব্যপারে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকও বক্তৃতা করেন।