চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
নগদ ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার অবৈধ টাকা ও ফেনসিডিলসহ রেলওয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসের ঘটনার তদন্ত করতে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে এসেছে তিন সদস্যের তদন্ত টিম।
সোমবার (৫ নভেম্বর) সকাল ১০টায় তদন্ত টিমের প্রধান বরিশাল বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক মো. সগির মিয়ার নেতৃত্বে তদন্ত টিম চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করে বলে কারাগার সূত্রে জানা গেছে।
তদন্ত টিমের অন্য দুই সদস্য হলেন- যশোর কে›ন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার কামাল হোসেন ও খুলনা কে›ন্দ্রীয় কারাগারের জেলার জান্নাতুল ফরহাদ।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত টিম চট্টগ্রাম কেন্দ্রিয় কারাগারের কর্মকর্তা, কারারক্ষি ও কারাবন্দীসহ বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলেছেন। কারাগারের বিভিন্ন নথিও দেখেছে চেয়েছে তদন্ত টিম।
বরিশাল বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক মো. সগির মিয়া বলেন, আমরা পুরো বিষয়টি তদন্ত করতে এখানে এসেছি। পুলিশকে সোহেল রানা বিশ্বাস যেসব তথ্য দিয়েছে সেগুলো আমরা তদন্ত করে দেখব। তদন্তের জন্য আমাদের দুই/তিন দিন চট্টগ্রামে অবস্থান করতে হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২৬ অক্টোবর দুপুরে চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেস থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসকে নগদ ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ও ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করে ভৈরব রেলওয়ে পুলিশের সদস্যরা। এ ছাড়া জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের এক কোটি ৩০ লাখ টাকার তিনটি চেক এবং স্ত্রী হোসনে আরা পপি, শ্যালক রকিবুল হাসান ও তার নিজের নামে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার এফডিআর নথি উদ্ধার করা হয়।
পরে সোহেল রানা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ভৈরব রেলওয়ে থানায় মাদকদ্রব্য ও মানি লন্ডারিং আইনে দুইটি মামলা দায়ের হয়।
২৯ অক্টোবর জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসকে দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইকবাল মাহমুদের আদালত।
রিমান্ডে সোহেল রানা বিশ্বাস নিজে মাদক সেবন ও কারারক্ষীদের মাধ্যমে কারাগারের ভেতরে মাদক বিক্রি করতেন বলে স্বীকার করেছেন। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ঠিকাদার অজয় নন্দী ও জনৈক নাছিরের মাধ্যমে সবজিসহ অন্যান্য মালামালের মধ্যে গাঁজা, ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক ঢুকিয়ে জেলের ভেতরে প্রবেশ করাতেন।
পরে মাদকাসক্ত কয়েদিদের কাছে বিক্রি করতেন। এসব অবৈধ ব্যবসা থেকে উপার্জিত অর্থ চট্টগ্রাম বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন) ও সিনিয়র জেল সুপারের মধ্যে ভাগ হতো। তাছাড়া জেলের ক্যান্টিন থেকেও মোটা অংকের টাকা আয় হতো বলে স্বীকার করেন সোহেল রানা বিশ্বাস।