মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার হোসেনদী গ্রামের বৃদ্ধ ইয়াবা ব্যবসায়ী শহীদ উল্লাহ (৬৫)। গ্রেফতার হওয়া এই বৃদ্ধ গত ছয় দিন ধরে পেট থেকে বের করে চলেছেন একের পর এক ইয়াবার ‘চালান’। কক্সবাজার কারাগারে এখন পর্যন্ত গত ৬ দিনে তিনি বের করেছেন মোট তিন হাজার ৪৮০ পিস ইয়াবা ।
কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপার বজলুর রশীদ আখন্দ জানান, টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা পাচারের দায়ে গত ৩ নভেম্বর শহীদ উল্লাহকে আটক করে কক্সবাজার কারাগারে আনা হয়। এর পর থেকেই তাঁর গতিবিধি ছিল সন্দেহজনক। তিনি এক প্রকার অস্বস্তিতে থাকতেন। গতকাল সকালে জেলার শাহাদত হোছাইন তাঁকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসা করতে শুরু করেন।
একপর্যায়ে শহীদ উল্লাহ বলেন, তিনি টেকনাফ সীমান্তে ইয়াবার চালান নিয়ে বিজিবি সদস্যদের হাতে ধরা পড়েন ৩১ অক্টোবর। এ সময় বিজিবি সদস্যদের চাপাচাপিতে তিনি টয়লেটে গিয়ে পাকস্থলী থেকে বের করেন দফায় দফায় দুই হাজার ৪০০ পিস ইয়াবা।
টেকনাফ সীমান্তের দমদমিয়া বিজিবি ফাঁড়ির নায়েক মাহবুবর রহমান জানান, লোকটিকে ৩১ অক্টোবর আটক করা হয় টেকনাফ সীমান্তের জাদিমোড়া মসজিদ এলাকা থেকে। তাঁর কাছ থেকে বিজিবি সদস্যরা উদ্ধার করেন ১০ হাজার ইয়াবার একটি চালান। পরে বিজিবি সদস্যরা তাঁর গতিবিধি দেখে তাঁকে পাকস্থলী থেকে কয়েক দফায় আরো দুই হাজার ৪০০ পিস ইয়াবা বের করতে বাধ্য করেন। বিজিবি পরে টেকনাফ থানায় ইয়াবাসহ বৃদ্ধকে সোপর্দ করে। গত ৩ নভেম্বর পুলিশ এই ইয়াবা পাচারকারীকে আদালতে চালান করে দেয়। এদিনই তাঁর স্থান হয় কক্সবাজার কারাগারে।
কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, দফায় দফায় বিজিবি ও পুলিশের চাপে পাকস্থলী থেকে কিছু ইয়াবা বের করলেও কারাগারে বিক্রির জন্য অবশিষ্ট ইয়াবা পেটে ধারণ করে রাখেন এই পাচারকারী। কিন্তু তিনি কারাগারে তিন দিনেও নিরাপদে ইয়াবা বের করার সুযোগ পাচ্ছিলেন না।
শেষ পর্যন্ত কারা কর্তৃপক্ষের চাপের মুখে গতকাল তিনি পেট থেকে ২৭টি পোটলা বের করে আনেন টয়লেটে গিয়ে। প্রতিটিতে ৪০টি করে বের করা হয় এক হাজার ৮০ পিস ইয়াবা। জেল সুপার বলেন, ‘বৃদ্ধ শহীদ উল্লাহর পেট থেকে চতুর্থ দফায় এ পরিমাণ ইয়াবা বের করা হয়। মনে হয় যেন তিনি একটি ইয়াবার কারখানা।’ কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাঁকে এখনো বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। শহীদ উল্লাহ দাবি করছেন, টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে এই নিয়ে তিনবার তিনি ইয়াবা পাচার করেন।