পাকিস্তানে ধর্মঅবমাননার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত খ্রিস্টান নারী আসিয়া বিবির আইনজীবী সাইফ-উল-মালুককে ইচ্ছের বিরুদ্ধেই দেশ ছাড়তে হয়েছে। জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাকে দেশ ছেড়ে নেদারল্যান্ডে যেতে সহযোগিতা করে। কারণ তিনিই ছিলেন হামলার মূল লক্ষ্য।
সোমবার সাইফ জানান, বুধবার আসিয়া বিবিকে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস দেয়ার পর থেকে ইসলামাবাদে ব্যাপক সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়। আর তখন তিনি ইসলামাদে নিযুক্ত জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
সাইফ হেগে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ওই জাতিসংঘ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করার পর তারা আমাকে তিন দিন তাদের কাছে রেখে আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে প্লেনে তুলে দেয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি বারবার দৃঢ়তার সাথে তাদের বলি যে আসিয়াকে জেল থেকে মুক্ত না করা পর্যন্ত আমি দেশত্যাগ করব না। তাকে জেল থেকে মুক্ত না করা পর্যন্ত আমার শান্তি নেই। কিন্তু তারা আমাকে বলেন যে আপনি এই মুহূর্তে বিক্ষোভকারীদের প্রধান টার্গেট এবং পুরো বিশ্ব আসিয়া বিবিকে দেখভাল করছে।
২০১০ সালে প্রতিবেশীদের সঙ্গে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে হযরত মুহম্মদ (স.)কে অবমাননা করার অভিযোগ ওঠে খ্রিস্টান নারী আসিয়ার বিরুদ্ধে। বালতিতে থাকা পানি গ্লাসে করে খাওয়ায় গ্লাসটি অপবিত্র হয়ে পড়ে বলে দাবি করেছিল প্রতিবেশী নারীরা। এরপরই তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়।
শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন আসিয়া। তবে নিম্ন আদালতে আসিয়ার দাবি টেকেনি; বিচারে তার মৃত্যুদণ্ড হয়, যার পরে হাইকোর্টেও বহাল থাকে।
ঐতিহাসিক রায়ে বুধবার আসিয়ার আপিল আবেদন গ্রহণ করে তাকে খালাস দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এরপরই বিক্ষোভ শুরু করে জনজীবন অচল করে দেয় কট্টরপন্থি ধর্মীয় সংগঠনগুলো, যার সমালোচনা এসেছে চলতি বছরই প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইমরান খানের কাছ থেকেও।
এরপরও বিক্ষোভ থামেনি। পরে সরকার ও টিএলপির মধ্যে সমঝোতার পরই অবস্থার উন্নতি ঘটে, বলছে স্থানীয় গণমাধ্যম।