Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০১ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘থাইল্যান্ড পৌঁছেছি’ বলে বাংলাদেশে ১৪ রোহিঙ্গাকে নামিয়ে দিল

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ নভেম্বর ২০১৮, ১১:২১ PM
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮, ১১:২১ PM

bdmorning Image Preview


থেমে নেই বঙ্গোপসাগর কেন্দ্রীক মানবপাচারকারী চক্রের অপতৎপরতা। এবারো পাচারের টার্গেট করা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের। রোহিঙ্গাদের আর্থিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে পাচারকারী চক্র রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে এখন সক্রিয়। পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও টার্গেট করেছে তারা। পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নেওয়া হচ্ছে বহুল সমালোচিত শাহ পরীর দ্বীপকে।

তেমনি আজ মঙ্গলবার সকালে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ ঘোলারচর সংলগ্ন উপকূল থেকে ১৪ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়। সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানান টেকনাফ বিজিবি-২ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লে. কর্নেল আছাদুদ জামান চৌধুরী। উদ্ধার ব্যক্তিরা উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা।

জানা যায়, সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে দালাল চক্রের সঙ্গে চুক্তি করেছিল তারা। টাকা পরিশোধের পর গোপনে রাতের আঁধারে ট্রলারে উঠে নারীসহ ১৪ রোহিঙ্গা। দুইদিন ছিলেন সাগরে ভাসমান। তারপর থাইল্যান্ড সীমান্তে পৌঁছানোর কথা বলে টেকনাফ সৈকতের বালিয়াড়িতে তাদের নামিয়ে দেয় দালাল চক্র। জেলেদের দেয়া খবরে সেখান থেকেই তাদের উদ্ধার করে বিজিবির সদস্যরা।

উদ্ধারকৃত রোহিঙ্গারা হলেন- উখিয়ার জামতলী রোহিঙ্গা শিবিরের মোহাম্মদ ইয়াছিন (২২), বালুখালী ক্যাম্পের মো. ইসলাম (২৬), থ্যাংখালী ক্যাম্পের খাইরুল আমিন (১৮), একই ক্যাম্পের মোহাম্মদ রহিম উল্লাহ (১৬), জাকের আহমদ (১৯), কতুপালং ক্যাম্পের সাইদুল আমিন (১৯) তার ভাই মোহাম্মদ সুলতান (৪৫), ফরিদুল আলম (১৮), থাইংখালী ক্যাম্পের নুর বাহার (১৮), বালুখালী ক্যাম্পের বিবি খদিজা (১৮), মধুরছড়া ক্যাম্পের খুরশিদা (১৮), একই ক্যাম্পের রফিজা (১৮), থাইংখালী ক্যাম্পের আনোয়ারা বেগম (১৮) ও টেকনাফ নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মোহাম্মদ হোসেন (১৭)।

এ দিকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের আটককৃত রোহিঙ্গারা বিজিবি’র কাছে স্বীকার করেছে, কুতুপালং ডি- ব্লকের বাসিন্দা আয়ুব আলী নামে এক রোহিঙ্গার কাছে তারা প্রত্যেকে ১০ হাজার টাকা করে দিয়েছিল। সাগরপথে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে এই টাকা নেয়া হয়। সেই অনুযায়ী ২ নভেম্বর রাত ১১ টায় তাদের টেকনাফ উপজেলার কচুবনিয়া থেকে নৌকায় তোলা হয়। দুই দিন সাগরে চলাচলের পর সেই নৌকা ভেড়ানো হয় শাহ পরীর দ্বীপের গোলারচরে। মালয়েশিয়া পৌঁছেছে এই কথা বলে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

টেকনাফ-২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আছাদুদ জামান চৌধুরী বলেন, শাহপরীর দ্বীপ ঘোলার চর থেকে ১৪ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা বলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

মানবপাচারকারী একটি দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে টাকার বিনিময়ে সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে চেয়েছিল রোহিঙ্গারা। টেকনাফের কচুবনিয়া ঘাট থেকে তাদের নৌকায় তুলে পাচারকারীরা গত দুইদিন ধরে সাগরে এদিক-ওদিক ঘোরায়। পাচারকারীরা বলেছিল, গভীর সাগরে একটি বড় জাহাজে রোহিঙ্গাদের তুলে দেয়া হবে। এর জন্য দালাল চক্রকে রোহিঙ্গারা জনপ্রতি ১০-২০ হাজার টাকা করে দিয়েছিল। দুই দিন সাগরে ঘোরানোর পর মঙ্গলবার ভোরে এই রোহিঙ্গাদের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ উপকূলে নামিয়ে দেয়া হয়। পরে স্থানীয় জেলেদের মাধ্যমে খবর পেয়ে বিজিবির একটি দল তাদের উদ্ধার করে।

Bootstrap Image Preview