নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নাজিমউদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাগারে নেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১টার সময় এ মামলার শুনানি শেষ হলে তাকে আবারওকারাগারে নেয়া হয়।
এর আগে মামলার অন্যতম আসামি খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারের ভেতরে স্থাপিত আদালতে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে হাজির করা হয়।
নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ১১ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ নির্ধারণ ছিল। তবে খালেদা জিয়ার শারীরীক অসুস্থতার কথা বলে বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা আদালতে সময় আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
পরে অভিযোগের গঠনের শুনানির জন্য ৮ নভেম্বর দিন ধার্য করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক মাহমুদুল হাসান। এ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার কারণে মামলাটির এজলাস নাজিম উদ্দিন রোডের কারাগারে বসানো হয়েছে।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় এই মামলা দায়ের করা হয়।
এর পর ২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়। এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। শুনানি শেষে ২০০৮ সালের ১৫ জুলাই নাইকো দুর্নীতির মামলার কার্যক্রম দুই মাসের জন্য স্থগিত ও রুল জারি করে আদালত।
পরে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম বিচারিক আদালতে চলবে বলে গত বছর ১৮ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদন খারিজ করে দেন। এ সংক্রান্ত ইতোপূর্বে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে রায় দেন আদালত। রায় প্রকাশের দুই মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়াকে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী গত বছরের ৩০ নভেম্বর তিনি আত্মসমর্পণ করেন। এরপরেই মামলাটির অভিযোগপত্র গঠন নিয়ে বেশ কয়েবার শুনানির তারিখ নির্ধারণ হলেও খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের আবেদনে তা বার বার পিছিয়ে যায়।