Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০১ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৫ | ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

খাবার কিনতে নিজ সন্তান বিক্রি করছেন বাবা-মা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০১৮, ০২:৪৩ PM
আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮, ০২:৪৩ PM

bdmorning Image Preview


আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলের শহর হেরাতের অধিবাসীরা কয়েক বছরের নজিরবিহীন খরায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে। পরিবারের সদস্যদের দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের ব্যবস্থা করতে পারছে না পরিবারগুলো। বাধ্য হয়ে খাবার কেনার জন্য নিজের সন্তান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে বাবা-মায়েরা।

এমন বেশ কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আফগান দুর্ভিক্ষের এক করুণ চিত্র তুলে ধরেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। জাতিসংঘের মতে, তীব্র খরায় ২০১৮ সালেই ঘরবাড়ি ছেড়েছেন অন্তত ২ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ।

এদের মধ্যে পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হেরাত থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৮৪ হাজার এবং বাদঘিছ এলাকার ১ লাখ ৮২ হাজার। এ বছর দেশটিতে চলমান সহিংসতায়ও এত মানুষ ঘরহারা হয়নি। টানা চার বছর অনাবৃষ্টির কারণে এই অঞ্চলগুলোর কৃষি খাত চরম সংকটে পড়েছে।

২০১৭ সালে আফিমের উৎপাদন রেকর্ড মাত্রায় হলেও এ বছরে তা কমে গেছে এক-তৃতীয়াংশ। হেরাত শহরের বাইরে একটি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকেই। সেই হতভাগ্যদের একজন মামারিন। যুদ্ধে স্বামী হারিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনে হারিয়েছেন ঘর।

পরিবারের অন্য সন্তানদের মুখেও একটু খাবার তুলে দিতে হারিয়েছেন এক সন্তানকে। মাত্র ৩ হাজার ডলারের বিনিময়ে ছয় বছরের মেয়ে আকিলাকে বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। ক্ষুধার জ্বালা থেকে বাঁচতে এ ছাড়া তার সামনে ‘আর কোনো পথই খোলা’ ছিল না বলে জানিয়েছেন তিনি।

মামারিন বলেন, ‘খরার কারণে আমি তিন সন্তান নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে আসি। এখানে এসেছিলাম সহযোগিতা পাওয়ার আশায়। কিন্তু কিছুই পেলাম না। সন্তানসহ না খেয়ে মৃত্যু এড়াতে আকিলাকে এক ব্যক্তির কাছে ৩ হাজার ডলারের বিনিময়ে দিয়ে দিই। কিন্তু আমি পেয়েছি মাত্র ৭০ ডলার। আমার কোনো টাকা নেই, খাবার নেই, স্বামীও নেই।’

বিক্রির বিষয়টি মেয়ে আকিলা জানে কিনা জানতে চাইলে মামারিন জানান, ‘আমি যে তাকে বিক্রি করেছি তা সে জানে না। কীভাবে জানবে, সে তো এখনও শিশু। কিন্তু আমার আর কোনো উপায় ছিল না। হেসে হোক বা কেঁদে হোক, তাকে যেতেই হবে। বাধ্য না হলে কি কেউ তার নাড়ির টুকরোকে বিক্রি করে।’

Bootstrap Image Preview