৪-৫ জনের একটি দল। তাদের একজন মেয়ে। টার্গেট রাজনৈতিক প্রোগ্রাম কিংবা বিভিন্ন সামাজিক ও জাতীয় দিবসে জনসমাগম হয় এমন কোন অনুষ্ঠান। মানুষের ফাঁদে ফেলে কৌশলে হাতিয়ে নেয় বিভিন্ন অংকের টাকা।
খুব জোড়ালো কৌশল কিংবা গায়ের জোর এমন কোনটাই ব্যবহার করেন না তারা। মানুষের আবেগ বুঝে তৈরি করেন বিভিন্ন স্টিকার কিংবা ব্যাজ। কারো ইচ্ছা হোক বা না হোক মানুষের পোশাকে তার পরিয়ে দিবে সেই ব্যাচ কিংবা স্টিকার। তারপর ২০০ থেকে ৫০০ টাকা দাবি করে। টাকা ছাড়া যেতে দিবে না এমন হুমকিও দেয়। প্রতিবাদ করলে সংঘবদ্ধভাবে তা মোকাবেলা করে। ফলে প্রতিনিয়ত অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হয় বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রোগ্রাম কিংবা দিবস সমূহে আসা সাধারণ মানুষজন।
এর আগে শেখ হাসিনাকে নিয়ে কওমি আলেমদের শুকরানা সমাবেশে এ চক্রটির কার্যক্রম বেশ সমালোচিত হয় এবং তা নিয়ে বিডিমর্নিং `প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে ‘শোকরানা মাহফিলে' সংঘবদ্ধ প্রতারণা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে।
এবার বিএনপির পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদের ব্যাজ পরিয়ে দেয়ার নামে প্রতারণা করছে এই চক্রটি।
সম্প্রতি রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ব্যাপক সমাগম হয় এবং বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকমীরা বিএনপি কার্যালয় ঘিরে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অবস্থান নেয়। এ সময় বিএনপির পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদের ব্যাজ পরিয়ে দিয়ে টাকা আদায়ের মাধ্যমে প্রতারণা করছে এই সংঘটিত চক্র।
চক্রটি বিএনপি নেতাকর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করে এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছবি ও তারেক রহমানসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় সিনিয়র নেতাদের ছবি ব্যবহার করে প্রতারণা করছে।
মনোনয়নের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মনোনয়ন প্রত্যাশী ও নেতাকর্মীদেরকে টার্গেট করে তারা। তারপর তারা ব্যাজ পরিয়ে দেয়। চক্রের সদস্যরা দাবি করে বিএনপির পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদের এ ব্যাজ পরিয়ে দেয়া হচ্ছে। ব্যাজ পড়ানো হলে তারা নেতাকর্মীদের কাছে টাকা দাবি করে। বিএনপি'র এই মনোনয়নকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুদিন যাবত তাদের এই প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা যায় বিএনপির পক্ষ থেকে ব্যাজ পড়ানোর কোনো উদ্যোগই নেয়া হয়নি।
মূলত চক্রের নারী সদস্যটি এই কার্যক্রমটি সরাসরি পরিচালনা করে থাকে যেকোনো ধরনের ঝামেলা কিংবা প্রতিরোধে চক্রের বাকি সদস্যরা হাজির হন।
মনোনয়ন প্রত্যাশীর সাথে আসা এক কর্মী জানান, ওই নারী আমাকে খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত একটি ব্যাজ পরিয়ে দিতে চায়, আমি তাতে না করিনি। ব্যাজ পড়ানোর পর সে বকশিশ দাবি করে আমি তাকে কিছু টাকা দেয়। তখন সে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করে। টাকা না দিয়ে বিষয়টির প্রতিবাদ করলে চক্রের বাকি লোকজন এসে নীতি কথা বলতে থাকে। তারা বলে একটি নারীর সাথে এমন আচরণ কেন করছি?
প্রতারক চক্রের এমন কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করে বিডিমর্নিং এর এই প্রতিবেদক চক্রের নারী সদস্যকে জিজ্ঞেস করলে তিনি প্রতিবেদককে চিনতে পারেন এবং বলতে থাকেন ‘ আপনি সে দিন শাহবাগে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি করেছেন আমাদের ছবি প্রকাশ করেছেন এবং আমাদের এই ব্যবসার অনেক ক্ষতি করেছেন আপনি আজকে আবার এসেছে নাহ?’ এবং তিনি ছবি না তুলার জন্য অনুরোধ করেন।
এরপর দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন এবং ঘণ্টাখানেক পর তাকে আবার ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে সামনে দেখা যায়। এসময় বিডিমর্নিং এর ক্যামেরা দেখে সে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করার চেষ্টা করেন।
এই নারী বেশ কিছুদিন যাবতই এরকম স্টিকার বিক্রির নামে প্রতারণা করে আসছে বলে অনেকেই অভিযোগ করে।