Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ৩০ বুধবার, এপ্রিল ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

প্রত্যন্ত এলাকাগুলো থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শাপলা

ইলিয়াস হোসেন, পাটকেলঘাটা(সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০১৮, ০১:৫১ PM
আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৮, ০১:৫৩ PM

bdmorning Image Preview


বিলের ধারে ফুটে থাকা সারি সারি শাপলা ফুল দেখতে যেমন বৈচিত্রময় তেমনি ধরণীর বুকে লাল সবুজের সমারোহে যেন মনোমুগ্ধকর দৃশ্যবলীর একটি। শাপলা শুধু শাপলা ফুলই নয় এটি আমাদের জাতীয় ফুল। সাধারণ নভেম্বরের শুরুতে শীতের আগমনী বার্তার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন বিলে ঝিলে কিংবা পুকুরে এর দেখা মেলে। গ্রাম ও শহুরে মানুষের কাছে এটি সবজি হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। অনেকে আবার শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। লাল শাপলার অনেক ঔষধি গুণও রয়েছে।

পাটকেলঘাটার প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে এখনও সাদা শাপলা দেখা মিললেও লাল, হলুদ, বেগুনী শাপলা প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন এলাকায় খাল-বিল ও নিচু জায়গায় পানি জমে থাকলে সেখানেই প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয় আমাদের জাতীয় ফুল শাপলা। এক দশক আগেও উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচুর শাপলা ফুল দেখা মিলত। তখন পুকুর খাল বিল ও জলাশয়গুলোতে লাল, গোলাপি, সাদা, বেগুনি, নীল ও বিরল প্রজাতির হলুদ শাপলা ফোঁটার কারণে চারিদিকে নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে প্রাকৃতিক দৃশ্যে পরিণত হতো।

সাধারণত শাপলা ফুল দিনের বেলা ফোঁটে এবং সরাসরি কান্ড ও মুলের সাথে যুক্ত থাকে। শাপলার পাতা আর ফুলের কান্ড বা ডাটি  বা পুষ্পদন্ড পানির নিচে মুলের সাথে যুক্ত থাকে। আর এই মুল যুক্ত থাকে মাটির সাথে এবং পাতা পানির উপর ভেসে থাকে। মুল থেকেই নতুন পাতার জন্ম হয়। পাতাগুলো গোল এবং সবুজ রঙ্গের হয়। কিন্তু নিচের দিকে কালো রং। ভাসমান পাতাগুলোর চারিদিক ধারালো হয়।

বর্তমানে সাদা প্রজাতির শাপলাগুলি বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেলেও দেখা যাচ্ছে না গোলাপি, বেগুনি, নীল ও হলুদ  শাপলা। এসব শাপলা কালের পরিক্রমায় হারিয়ে যাওয়ার পিছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে বলে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়। কারো মতে কপোতাক্ষের নাব্যতা হ্রাস, খাল বিল ও জলাশয় ভরাট করে কৃষি জমি তৈরী, ঘরবাড়ি তৈরী, ফসলি জমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার এবং জলবায়ূ পরিবর্তনের কারণে আমাদের জাতীয় ফুল শাপলা হারিয়ে যেতে বসেছে। এক সময় বিলে পুকুরে বর্ষা মৌসুমে নানা রংয়ের শাপলার বাহারী রুপে মানুষের নয়ন জুড়িয়ে যেতো। ছোটদের খুবই প্রিয় এই শাপলা। শাপলার ড্যাপ শিশুদের প্রিয় খাবার এবং গ্রামের লোকেরা ড্যাপ দিয়ে খই ভেজে মোয়া সহ বিভিন্ন প্রকার সু-স্বাদু খাবার তৈরী করে।

এ ব্যাপারে পাটকেলঘাটা হারুণ অর রশিদ কলেজের জীব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মোছাঃ জাহানারা খাতুন বলেন, ফসলি জমিতে অধিক মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন, খাল-বিল ও জলাশয়ে মাছ চাষ এবং ভরাটের ফলে পাটকেলঘাটার বিলাঞ্চল হতে ক্রমাম্বয়ে বিলুপ্তির পথে বিভিন্ন প্রজাতির শাপলা। যার ফলে এখন আর খাল-বিল জলাশয়ে শাপলা তেমন আর চোখে পড়ে না।

Bootstrap Image Preview