রাজধানীর ভিকারুননেসা নূন কলেজের সহপাঠীর আত্মহত্যার ঘটনায় দায়ীদের বিচার দাবিতে আগামীকাল পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন কলেজের মূল ক্যাম্পাসের আন্দোলনরত ছাত্রীরা।
মঙ্গলবার(৪ ডিসেম্বর) বিকেল পাঁচটার দিকে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সব শিক্ষার্থীর পক্ষে আনুশাকা নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, আগামীকাল বুধবার তারা পরীক্ষা বর্জন করে কালো ব্যাজ ধারণ করে স্কুলের প্রধান ফটকে অবস্থান নেবেন। পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিন দিনের মধ্যে সুষ্ঠু বিচার না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
সিদ্দিকী নাসির উদ্দীন নামে এক অভিভাবক জানান, তিন দফা দাবিতে তারা আন্দোলন করছেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রচলিত আইনে বিচার, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও পরিচালনা কমিটির সদস্যদের অপসারণ বা পদত্যাগ এবং প্রতিষ্ঠানটির জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য তাদের এই আন্দোলন।
এর আগে রবিবার পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারী (১৫)। ফোনে নকল থাকার অভিযোগ তুলে তাকে পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এরপর ওই ছাত্রীর বাবা-মাকে ডেকে পাঠায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার সকালে তারা স্কুলে যান এবং মেয়ের হয়ে দফায় দফায় ক্ষমা চান। কিন্তু এরপরও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাদের অপমান করেন এবং স্কুল থেকে অরিত্রি অধিকারীকে ছাড়পত্র দেওয়ার ঘোষণা দেন।
নিজের সামনে বাবা-মায়ের এমন অপমান সইতে না পেরে ওইদিন দুপুরে শান্তিনগরের বাসায় ফিরে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে ওই ছাত্রী। ওই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠে বেইলি রোডে ভিকারুননিসার ক্যাম্পাস।
অরিত্রি রায়ের আত্মহত্যাকে আত্মহত্যা বলতে চান না তার সহপাঠীরা। তাদের দাবি, ছোট্ট অপরাধে অরিত্রিকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছেন শিক্ষকরা।
অরিত্রির একজন স্বজন জানিয়েছেন, অরিত্রির আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ তুলে আজকালের মধ্যেই মামলা করবেন বাবা দিলীপ অধিকারী। কারা ঘটনায় জড়িত তাদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে এই মামলা করা হবে। তা ছাড়া পরিবারটি এখনও শোকাচ্ছন্ন থাকায় মামলা করতে বিলম্ব হচ্ছে।
পল্টন থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অরিত্রির আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি। পুলিশ ওই ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা পরে মামলা করবে বলে জানিয়েছেন।