Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ রবিবার, মে ২০২৫ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

বুয়েটে ৩ সাংবাদিককে আটকে রেখে মারধর ছাত্রলীগের

বুয়েট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৪:৫০ PM
আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৪:৫০ PM

bdmorning Image Preview


বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে তিন সাংবাদিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মারধর ও হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে এ ঘটনা ঘটে। তবে বুয়েট ছাত্রলীগের নেতারা মারধরের কথা অস্বীকার বলেছেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকে খারাপ আচরণের একটি ঘটনা ঘটেছে।

ভুক্তভোগী তিন সাংবাদিক হলেন- দৈনিক জনকণ্ঠের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার মুনতাসির জিহাদ, কালের কণ্ঠের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মেহেদী হাসান ও ইত্তেফাকের বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার কবির কানন।

অভিযুক্তরা হলেন- বুয়েট শেরে বাংলা হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দফতর সম্পাদক আসিফ রায়হান মিনার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সাবেক সম্পাদক এসএম মাহমুদ সেতু, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক নাফিউল আলম ফুজি, সাবেক প্রচার সম্পাদক নিলাদ্রি নিলয় দাস, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাজিদ মাহমুদ অয়ন, সাবেক সহ-সভাপতি সন্টুর রহমান প্রমুখ।  

তাদের সঙ্গে আরও ছিলেন- মেকানিকাল বিভাগের অর্ণব চক্রবর্তী সৌমিক, সিভিল ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের রাউফুন রাজন ঝলক, মেকানিকাল বিভাগের মিনহাজুল ইসলাম, নেভাল আর্কিটেকচার বিভাগের নিলাদ্রী নিলয় দাস, নেভাল আর্কিটেকচার বিভাগের মেহেদী হাসান, তড়িত কৌশল ফারহান জাওয়াদ।

হামলার শিকার সাংবাদিকরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে আটকে রাখা হয়েছে এমন খবর পেয়ে তারা সেখানে যান। হলে প্রবেশ করতে গেলে গেট তালাবদ্ধ দেখতে পান। এ সময় ভিতরে প্রবেশ চাইলে হলের নিরাপত্তা প্রহরী জানান, ভিতরে ঢুকতে ছাত্রলীগের নিষেধ আছে। পরে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করেন তারা।

তারা অভিযোগ করেন, হলে প্রবেশ করার পাঁচ মিনিটের মধ্যে শেরে বাংলা হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং হলে ভিতরে প্রবেশের কারণ জানতে চান। এ সময় শিক্ষার্থী অপহরণের খবরের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা সাংবাদিকদের মারধর করেন। কেড়ে নেন মোবাইল ফোন, পরিচয়পত্র ও মানি ব্যাগ। সেখান থেকে তাদের নেওয়া হয় হলের ক্রীড়া কক্ষে। প্রায় ৩০ মিনিট কক্ষটিতে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি ও ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের হস্তক্ষেপে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

কালের কণ্ঠের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মেহেদী হাসান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ধরে নিয়ে গেছে- এমন তথ্য পেয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলাম। ঘটনাটির বিষয়ে একেকজন একেক রকম তথ্য দিচ্ছিল। হলের ভেতর প্রবেশ করার পরে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাংবাদিক পরিচয় পেয়েও আমাদের মারধর করে।

এদিকে ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর রাত ১২টার দিকে বুয়েট ছাত্রলীগের সভপতি খন্দকার জামী-উস সানী ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে এসে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান। কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবেন না বলে জানান।

বুয়েট ছাত্রলীগের সভপতি বলেন, সেখানে কাউকে মারধর করা হয়নি। ভুল বোঝাবুঝি কারণে সাংবাদিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে কয়েকজন।

এই বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, বিষয়টি শুনেছি। এটা দুঃখজনক ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বুয়েটের শেরে বাংলা হল প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Bootstrap Image Preview