ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণ সুমাত্রার সুন্দা প্রণালীতে ভয়াবহ সুনামিতে এখন পর্যন্ত ২২২ জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন ৮৪৩ জন ও নিখোঁজ রয়েছেন অসংখ্য মানুষ। দেশটির সান্দা স্ট্রেইট উপকূলে শনিবার রাতে ভয়াবহ এই সুনামি আঘাত হানে। দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার স্থানীয় সময় আনুমানিক রাত সাড়ে ৯টায় কোনোরকম পূর্বাভাস ছাড়ািই দক্ষিণ সুমাত্রায় সুনামিটি আঘাত হানে। সুন্দা প্রণালীর উপকূলীয় এলাকায় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের প্রভাবে সুনামির সৃষ্টি হয়েছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ভয়াবহ এই সুনামিতে ৪৩০টি বাড়ি ও ৯টি হোটেল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
সুনামিতে পানদেগ্লাং, দক্ষিণ লামপাং ও সিরাং অঞ্চল থেকে নিহতের থবর পাওয়া গেছে। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ান আবহাওয়াবিজ্ঞান, ক্লিম্যাটোলজি এবং জিওফিজিক্যাল এজেন্সি (বিএমকেজি) জানায়, লামপাংয়ের মাউন্ট ক্রাকাতোয়া দ্বীপের আগ্নেয়গিরির প্রভাব থেকে সম্ভবত এ সুনামির উৎপত্তি হয়েছে।
বিএমকেজি আরো জানায়, কোন ভূমিকম্পের ফলে এটির সৃষ্টি হয়নি।
এর আগেও দেশটিতে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর সৃষ্ট সুনামিতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় সুলাওয়েসি দ্বীপ। এতে নিহত হয়েছিলেন প্রায় ২ হাজার মানুষ।
জাভা দ্বীপ ও সুমাত্রার মাঝখানে অবস্থিত সুন্দা প্রণালী উপকূল জাভা সাগরকে ভারত মহাসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। জাতীয় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা উপকূলীয় অঞ্চল থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তারা আশঙ্কা করছে আরও সুনামি আঘাত হানতে পারে ওই অঞ্চলে।
জাতীয় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র সুতোপো নুগরোহো বলেন, ভয়াবহ এই সুনামি কোনও ভূমিকম্পের কারণে হয়নি। সম্ভবত লামপাংয়ের মাউন্ট ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতই সুনামির কারণ। ইন্দোনেশিয়ার ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা সুনামির প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করছে।
জাতীয় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার হিসাব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত পানদেগলাং জেলায় ১৬৪ জন, সেরাং জেলায় ১১ জন, দক্ষিণ লামপং জেলায় ৪৮ জন ও টেংগামাস জেলায় একজন নিহত হয়েছেন। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং এখন পর্যন্ত কোনো বিদেশি পর্যটকের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।