অনেক দিন ধরেই ছবি নির্মাণের একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান এফডিসিতে ছবি নির্মাণের কাজ কমে গেছে এবং সেই শঙ্গে কমেছে শুটিং হাউসের ব্যস্ততাও। বেশিরভাগ সময়টাতেই এফডিসি নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু বছরের শেষের দিকে এসে হটাৎ করে এফডিসি মুখরিত হয়ে উঠেছে কয়েকটি ছবির শুটিং নিয়ে।
এফডিসির প্রধান গেটের কাছাকাছি চার নম্বর ফ্লোরে ‘অবতার’ শিরোনামের একটি ছবির শুটিং কাজ চলছে। ছবিতে অভিনয় করছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। ছবিটির আইটেম গানের শুটিং দিয়েই কাজ শুরু করেছেন তিনি এবং তার বিপরীতে অভিনয় করছেন নবাগত রউশো। এই ছবিটির মাধ্যমে অনেকদিন পর শুটিংয়ে ফিরেছেন মাহি। শুটিংয়ে ফেরা প্রসঙ্গে মাহি বলেন, ‘কাজ তো নিয়মিতই করতে চাই। কিন্তু ছবি নির্মাণের সংখ্যাই তো কমে গেছে। তাই ইচ্ছা থাকলেও এখন আর নিয়মিত কাজ করা হচ্ছে না।’
ছবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভিন্ন এক গল্পের ছবি এটি। আমার চরিত্রও ভিন্নতা রয়েছে। এর বেশি কিছু আর বলতে চাই না এখন।’
এছাড়া শিল্পী সমিতির পাশে চিত্রনায়ক জসিম ফ্লোরের গলিতে কৃত্রিম ট্রাফিক জ্যাম তৈরি করে নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুলের পরিচালনায় শুটিং করা হচ্ছিল ‘জ্যাম’ নামে একটি ছবির। এ ছবিতে অভিনয় করছেন আরেফিন শুভ ও পূর্ণিমা। তারা দু’জনেই এফডিসিতে এ ছবির শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন।
বিশেষ করে এ ছবির মাধ্যমে অনেকদিন পর অভিনেত্রী পূর্ণিমার প্রত্যাবর্তন ঘটছে। এ প্রসঙ্গে পূর্ণিমা বলেন, ‘ভালো কিছুর জন্য অপেক্ষা করেছি। অবশেষে সেটা পেয়েছি। শুটিং শুরু করেছি।’ আবারও ছবিতে নিয়মিত দেখা যাবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আশা তো করছি। বাকিটা সময়ই বলে দেবে।’
এমনকি এর সাথে সাথে ঢাকাই ছবির নবাব শাকিব খানের শুটিংও চলছে এফডিসিতে। ছবির নাম ‘একটু প্রেম দরকার’। শাহীন সুমনের পরিচালনায় এ ছবিতে নায়িকা হিসেবে রয়েছেন বুবলী। কিছুদিন বিরতির পর আবারও ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে বুবলী বলেন, ‘শাকিব খানের শিডিউলের সঙ্গে মিলিয়েই ছবির কাজ করতে হচ্ছে। তাই কিছুদিন বিরতি ছিল। এবার টানা কাজ করে এ ছবির কাজ শেষ করার চেষ্টা করব।’
এমনিতে শাকিব খানের উপস্থিতি মানেই এফডিসিতে প্রাণের সঞ্চার। প্রায়ই তিনি এফডিসিতে শুটিং করেন। যথারীতি গত দু’দিনও তার উপস্থিতিতে এফডিসি ছিল সরগরম।
শাকিব খান বলেন, ‘এখন তো ছবি নির্মাণের হার একেবারেই কমে গেছে। আমি চেষ্টা করছি কিছুটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে। একাই তো টেনে যাচ্ছি ইন্ডাস্ট্রি। সবাই যদি এক হতে না পারে তাহলে এভাবেই শূন্য এফডিসি নিয়েই পড়ে থাকতে হবে।’
এছাড়াও সদ্য প্রয়াত প্রখ্যাত চিত্রপরিচালক আমজাদ হোসেনের জানাজাও এফডিসিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই উপলক্ষে পুরনো অনেক সহকর্মীর মধ্যে দেখা সাক্ষাৎও হয়েছে। শুটিংমুখর এফডিসি দেখে নস্টালজিয়ায় ফিরে গেছেন তারাও।
বছরের শেষদিকে এসে প্রাণবন্ত এফডিসি দেখে অনেকেই এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। আবার অনেকে স্মৃতিচারণ করে আফসোসও করেছেন। এক সময় কত না মুখর থাকত এই এফডিসি। তবে বছর শেষের এ কর্মব্যস্ততা যেন আগামী বছরও বজায় থাকে সেই প্রত্যাশাই করছেন চিত্রকর্মীরা।