নির্বাচন উপলক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর ঘোষিত ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন ও সরকারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্যে ‘মনিটরিং সেল’ গঠনের প্রস্তাব করেছিল মুভমেন্ট ফর ওয়ার্ল্ড এডুকেশন রাইটস। গত ২৩ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষিত ইশতেহার ও সেই অনুযায়ী সরকারের কার্যক্রম পর্যালোচনা ও জবাবদিহিতার জন্যে এমডব্লিউইআর একটি ‘মনিটরিং সেল’ গঠনের প্রস্তাব করেছিল।
সেই প্রস্তাবটি আজ ২৬ ডিসেম্বর-২০১৮ আওয়ামী লীগের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার প্রণেতা উপ-কমিটির সম্মানিত সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দীক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার প্রণেতা উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর হাতে তুলে দিয়েছেন ’মুভমেন্ট ফর ওয়ার্ল্ড এডুকেশন রাইটস’ এর আহ্বায়ক ফারুক আহমাদ আরিফ ও যুগ্ম-আহ্বায়ক এনায়েতুল্লাহ কৌশিক। এ সময় এমডব্লিউইআরের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাব্বির আহমেদ, অনির্বাণ বিশ্বাস, ইলিয়াস শান্ত ও আহমেদ ইসমাম।
আজ সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানী ঢাকার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নগর হাসপাতালে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর হাতে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহার ও সরকারের কার্যক্রম মনিটরিং ও জনগণের কাছে সেই বিষয়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রস্তাবনা তুলে দেওয়া হয়।
এ সময় আরিফ বলেন, জাতীয় সংসদ যদিও সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু তথাপি রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সরকারের কার্যক্রম পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণের জন্যে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতা, সরকার দলীয় ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক/সভাপতি ও বিরোধীদলের ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক/সভাপতি, সরকার ও বিরোধীদলয় দলীয় সংসদ সদস্য, শিক্ষার্থী ও তরুণসমাজ ও সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কমিটি করে একটি মনিটরিং সেল গঠন করা প্রয়োজন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্বাচনে জয়ী হলে ইশতেহারে ঘোষিত বিষয়গুলো সরকার গঠন করে বাস্তবায়ন করবে এটাই জনগণের প্রত্যাশা। যদিও বাংলাদেশে নির্বাচিত হওয়ার পর ইশতেহারের বিষয়টি কেউ প্রশ্নও করে না বা প্রতিশ্রুতির কতটুকু বাস্তবায়িত হলো সে সম্পর্কে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের পক্ষ থেকেও জবাবদিহিতা জনগণের কাছে করে না। এ অবস্থায় ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন ও সরকারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও সহযোগিতার জন্যে ‘মনিটরিং সেল’ গঠন করা সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। সরকার গঠনের পর এই বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো কার্যকরী ব্যবস্থা নিবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।
জবাবে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রস্তাবটি খুব ভালো। আমরা বিশ্বাস করি ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে যারা বিজয়ী হবে তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করবে। এতে করে সরকারের সাথে জনগণের সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এমন প্রস্তাব ইতিপূর্বে কেউ করেনি আশা করি সব রাজনৈতিক দলগুলো বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করবে এবং বাস্তবায়নে এগিয়ে আসবে।
অপরদিকে রাত ৮টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দীকীর বাসায় নেতৃবৃন্দ তার সাথে সাক্ষাৎ করে ‘মনিটরিং সেল’ এর প্রস্তাবটি তুলে ধরেন। প্রস্তাবটি পড়ে আরেফিন সিদ্দীকী বলেন, আমরা একটা নতুন চিন্তা পেলাম। চিন্তাটি খুব ভালো। নির্বাচনের পর যারা সরকার গঠন করবে ও বিরোধী দলে থাকবে তাদেরকে নিয়ে একটি সেমিনার বা আলোচনা অনুষ্ঠান করে বিষয়টির বিষয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা প্রয়োজন। এটি বাস্তবায়ন হলে ইশতেহারে ঘোষিত বিষয় ও সরকারের কার্যক্রমের মধ্যে একটি মেলবন্ধন তৈরি হবে। জনগণ ও সরকারের মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে। এ জন্যে রাজনীতিবিদদেরই এগিয়ে আসতে হবে।
এমডব্লউইআর প্রস্তাবিত ‘মনিটরিং সেল’ গঠন প্রক্রিয়া-
সভাপতি: প্রধানমন্ত্রী ও সহ-সভাপতি বিরোধীদলীয় নেতা।
সদস্য সচিব: সরকার দলীয় ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক/সভাপতি ও যগ্ম-সদস্য সচিব বিরোধীদলের ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক/সভাপতি।
সদস্যবর্গ: ক. সরকার ও বিরোধীদলয় দলীয় সংসদ সদস্য ৩ জন করে ৬ জন।
খ. শিক্ষার্থী ও তরুণসমাজের প্রতিনিধি ৪ জন।
গ. বিশেষজ্ঞ বিষয়ভিত্তিক (শিক্ষক, সাংবাদিক, পেশাজীবী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ) ১০ জন।
এ ছাড়া পরিবেশ-পরিস্থিতির আলোকে পরিকল্পনা গ্রহণ করবে। এতে শিক্ষার্থী, তরুণসমাজ, শিক্ষক, বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে কমিটি একসাথে কাজ করতে পারে।