একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজধানীর প্রায় দেড় হাজার কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এসব কেন্দ্রসহ মোট ২ হাজার ১১৩টি কেন্দ্রে ৪৫ হাজার পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে।
ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ১৬টি সংসদীয় আসন রয়েছে। এসব আসনের বিপরীতে ২ হাজার ১১৩টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে ১ হাজার ৪৫৮টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত এবং ৬৫৫টি কেন্দ্রকে সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) বা সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) বা সার্জেন্টের নেতৃত্বে চার জন পুলিশ কনস্টবলসহ মোট পাঁচ জন পুলিশ মোতায়েন করা থাকবে। এছাড়া, সাধারণ কেন্দ্রে একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) বা সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) বা সার্জেন্টের নেতৃত্বে তিন জন পুলিশ কনস্টেবলসহ মোট চার জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।
সূত্র আরো জানায়, রাজধানী ঢাকায় ১ হাজার ৪৫৮টি ঝুঁকিপূর্ণ নির্বাচন কেন্দ্রের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র হলো ওয়ারী বিভাগে। ওয়ারী বিভাগের ছয়টি থানা এলাকার মধ্যে ওয়ারীতে ২২টি, শ্যামপুরে ২৫টি, যাত্রাবাড়ীতে ৭১টি, ডেমরায় ৪৪টি, কদমতলীতে ৪৯টি ও গেন্ডারিয়ায় ২১টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে। এছাড়া, লালবাগ বিভাগের কোতোয়ালী থানা এলাকায় ১০টি, সূত্রাপুরে ১৯টি, চকবাজারে ৪টি, বংশালে ৪৫টি, লালবাগে ১৪টি ও কামরাঙ্গীরচরে ৩১টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে। মতিরঝিল বিভাগের ছয় থানার মধ্যে মতিঝিলে ২৩টি, পল্টনে ১৭টি, শাজাহানপুরে ২৮টি, সবুজবাগে ৪১টি, খিলগাঁওয়ে ৬৩টি ও মুগদা থানায় ৩৮টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুরে ৫১টি, তেজগাঁওয়ে ৩৪টি, শেরেবাংলানগরে ১২টি, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ১৭টি ও আদাবরে ১২টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে। রাজধানীর মধ্যে সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে রমনা বিভাগে। রমনা বিভাগের রমনা থানায় ৬টি, শাহবাগে ৮টি, ধানমন্ডিতে ১৩টি, নিউমার্কেটে ১টি, হাজারীবাগে ৬৪টি ও কলাবাগানে ১০টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও অতীত ইতিহাস বিবেচনায় যে ভোটকেন্দ্রে যে রকম ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, তা নেওয়া হচ্ছে। ভোটকেন্দ্রের পাশাপাশি পুরো শহরেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। নির্বাচনি মোবাইল পার্টি, স্ট্রাইকিং রিজার্ভ ফোর্স, ডিবি, সোয়াট ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটও প্রস্তুত থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন উপলক্ষে একটি সমন্বিত ও ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেকোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ যেন নাশকতা করতে না পারে।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। নির্বাচনি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়ানের পাশাপাশি পুরো ঢাকায় টহল, গোয়েন্দা নজরদারি ও উদ্ভূত পরিস্থিতি এড়াতে স্ট্রাইকিং ফোর্সও রাখা হবে।’