Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১০ শনিবার, মে ২০২৫ | ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

একাই ৬ পদের দায়িত্ব পালন করেন কিশোরগঞ্জের এডিসি!

রাজীবুল হাসান, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৬:৪৯ PM
আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৬:৪৯ PM

bdmorning Image Preview


একাই ছয় পদের দায়িত্ব পালন করছেন কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও উপ-সচিব তরফদার মো. আক্তার জামীল। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলায় প্রশাসনের নিজ পদ ছাড়াও সর্বোচ্চ আরও পাঁচটি পদের কর্মকর্তাদের অবর্তমানে যশোরের অভয়নগরের সন্তান জনবান্ধব এ কর্মকর্তা এখন দায়িত্ব পালন করছেন।

বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তরফদার মো. আক্তার জামীল নিজ পদ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ছাড়াও জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত), স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও উন্নয়ন), অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এর দায়িত্ব পালন করছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ছুটিতে ২২-২৮ জুন ভারতে অবস্হান করছেন জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ২০ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত 'ক্যাপসিটি ডেভেলপমেন্ট অব দ্যা কেবিনেট ডিভিশন এন্ড ফিল্ড এডমিনিস্ট্রেশন' শীর্ষক প্রশিক্ষণে অস্ট্রেলিয়া অবস্হান করছেন। ২৬-২৭ জুন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের ঝউএ কর্মশালায় যোগদান করেছেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও উন্নয়ন) এর পদটি ৩ জুন হতে বদলিজনিত কারণে শূন্য রয়েছে, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ২৭ জুন গুচ্ছগ্রাম সংক্রান্ত সভায় যোগদান করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পাঁচ পদে দায়িত্ব পালনের কথা জানিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও উপ-সচিব তরফদার মো. আক্তার জামীল জানান, প্রশাসনে একাধিক পদে দায়িত্ব পালন নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। অতীতে আমার উপর যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা যথাযোগ্যভাবে পালনের চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতেও যে দায়িত্ব দেয়া হোক না কেন তা যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করব। তিনি জানান, সকলে সম্মিলিতভাবে কাজ করলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রূপকল্প-২০৪১ অর্জন সম্ভব।

উল্লেখ্য, গত ২০১৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জে যোগদানের পর থেকে তিনি জেলা প্রশাসনে নীতি নির্ধারণী পদে থেকে পরিচ্ছন্ন মনে জনসাধারণের জন্য সেবার দুয়ার খুলে দিয়েছেন। এনেছেন প্রশাসনে গতিশীলতা। কাজের মাধ্যমেই উজ্জ্বল করেছেন সরকারের ভাবমূর্তি। জনসাধারণের সঙ্গে মিশে যাওয়ার অসাধারণ ক্ষমতার কারণেও তিনি জনপ্রিয়। অত্যন্ত নৈতিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করে তিনি একজন দক্ষ প্রশাসক হিসেবেও বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছেন। ফলতা ও সুনামের সঙ্গে প্রশাসন চালাতে গিয়ে প্রশাসনে নিজেদের কাজের মাঝেও অপূর্ব সমন্বয় রেখেছেন। এসব কারণেই কিশোরগঞ্জের ইতিহাসে তাকে ধরা হচ্ছে সৎ, কর্মঠ ও শ্রেষ্ঠ জনবান্ধব কর্মকর্তা হিসেবে। জেলার রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকে সুশীল সমাজ এমনকি নতুন প্রজন্মও তার ভূমিকায় মুগ্ধ।

কিশোরগঞ্জে যোগদানের পরপরই তিনি মোবাইল কোর্টের তফসিলভুক্ত আইনের উপর একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযানসহ বাল্যবিবাহ নির্মূলে একাধিক অভিযান ও প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করেন। জঙ্গীবাদ বিরোধী কার্যক্রম বন্ধে একাধিক সভা ও উঠান বৈঠক করেন। এ ছাড়াও দ্রব্যে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, নরসুন্দা নদী অবমুক্তকরণ ও ধুমপানবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে তিনি জেলাবাসীর কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন প্রথম থেকেই।

এমনকি শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ধূমপান বিরোধী সতর্কীকরণ নোটিশ স্থাপনের মাধ্যমে জেলার পাবলিক প্লেসকে ধূমপানমুক্ত করার জন্য তিনি লাগাতার কাজ করেন। যার জন্য কিশোরগঞ্জ জেলা ২০১৭ সালে দেশের শ্রেষ্ঠ জেলার পুরস্কার অর্জন করে। জেলা প্রশাসনের পক্ষে নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি জেলাবাসীকে অঞ্চল ভিত্তিক একটি সর্ববৃহৎ ২১শে বইমেলা উপহার দেন।

এ ছাড়াও তিনি শোলাকিয়া জঙ্গী হামলায় বিশেষ অবদান রাখেন, গতবছর কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে আগাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল পরিদর্শন এবং ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে জেলা প্রশাসনের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন যা দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ দেশবাসীর নজরে আসেন।

Bootstrap Image Preview