একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ আগামীকাল রবিবার। ভোটগ্রহণের জন্য ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে খুলনা জেলা রিটার্নিং অফিস।
শনিবার (২৯ ডিসেম্বর) উপজেলায় উপজেলায় চলে যাচ্ছে ব্যালট পেপার। এই নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে প্রস্তুত হয়েছেন, খুলনার ৬টি আসনের প্রায় ১৮ লাখ ভোটার।
ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। প্রচারণায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সবদিক থেকে এগিয়ে থাকলেও বিএনপি ছিল পিছিয়ে। এই নির্বাচনে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে যেতে পারবেন কিনা? ভোট সুষ্ঠু হবে কিনা? কোন হামলার ঘটনা ঘটবে কিনা? এই সব নিয়ে ভোটারদের মাঝে রয়েছে যথেষ্ট সংশয়। এবারে খুলনার ৬ টি আসনে ৭৮৬টি ভোটকেন্দ্রের মধ্য ৫২৫টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।
এছাড়া মহানগরের ৩০৯টি কেন্দ্রের ভিতর ২৪২টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বা গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছে খুলনার পুলিশ। তবে কোথাও যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে না পারে, সেজন্য প্রশাসন সবধরণের পদক্ষেপ আগে থেকেই নিয়ে রেখেছে। নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেয়া হবে খুলনাকে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ রাখতে বেশ কয়টি বিষয়ে লক্ষ করা হয়েছে এবারের নির্বাচনে। কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা, কোনো প্রার্থীর বাড়ির কাছে ভোট কেন্দ্র কিনা, নেতাকর্মীদের প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা আছে কিনা এই সকল বিষয় বিচার-বিশ্লেষণ করেই ঝুঁকিপূর্ণ বা গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র বিবেচনা করা হয়েছে এবারের নির্বাচনে।
তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী। সেই সাথে রয়েছে বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও আনসার। কোনোভাবেই নির্বাচনকে বিতর্কিত হতে দেয়া হবে না।
যদিও নাম প্রকাশ না করার শর্তে খুলনার বিভিন্ন এলাকার একাধিক ভোটার সংশয় ও প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের অনেকের প্রশ্ন ছিল- কেন্দ্রে কি যাওয়া যাবে? গেলেও স্বাধীনভাবে ভোট দেয়া যাবে কি? আগে থেকেই ভোট দেয়া হয়ে যাবে কি না? ইভিএম মেশিনে কোন গোলযোগ করা হবে কি না? এর উত্তর মিলছে না।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার সোনালী সেন বলেন, এবারের জাতীয় নির্বাচন যেন সুষ্ঠু, নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ হতে পারে সেই লক্ষ্যে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত আছে। আমাদের নিত্যনৈমত্তিক কার্যক্রম হিসেবে আমাদের অভিযান পরিচালনা হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিটি কেন্দ্রে ১৪ জন পুলিশ মোতায়েন থাকবে এবং সাধারণ কেন্দ্রে থাকবে ১২ জন। ভোট কেন্দ্রগুলোতে পুলিশ থাকবে ৭ হাজার এবং আনসার থাকবে সাড়ে ৯ হাজার। এছাড়াও থাকবে বিজিবি ও র্যাবের টহল।
খুলনার রিটানিং কর্মকর্তা হেলাল হোসেন বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সকল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ করতে সকল বাহিনীর সমন্বয়ে আমাদের যা করণীয়, আমরা তা করছি। ইতিমধ্যে খুলনায় ৪৩ জন বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট, ২০ প্লাটুন বিজিবি, ৯ প্লাটুন সেনাবাহিনী ও ১০ প্লাটুন কোষ্টগার্ড মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এবারে খুলনায় ৬টি আসনে সব দল মিলিয়ে মোট ৩৫ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন এবং ১৮ লাখ ৯'শ ৮৯ জন ভোটার তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।