এক নয়, দুই নয়-পরপর সাতটিই কন্যাসন্তান। কিন্তু ছেলে সন্তান না হলে কী করে হবে। বংশের বাতি জ্বালাবে কে? তাই ছেলে সন্তান চা-ই চাই। তাই ছেলের অন্তত দশবার অন্তঃসত্ত্বা হতে হয়েছে তাকে। দু-দুবার গর্ভপাতও করতে হয়েছে।
এবার তার ছেলে হলো ঠিকই। কিন্তু বংশরক্ষা হলো না। মৃত পুত্রসন্তান প্রসব করলেন। ধকলের মুখে হাত তুলে দিল শরীরও। দশমবার মা হতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা গেলেন ৩৮ বছরের মীরা। ঘটনাটি ভারতের মহারাষ্ট্রের।
ভারতের জনপ্রিয় দৈনিক আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুত্রসন্তানের জন্য পরিবার থেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে চাপে রাখা হচ্ছিল ওই নারীকে। এত ধকলে শরীর ভেঙে পড়েছিল আগেই। তবু পরিবারের আকাঙ্ক্ষা ও চাপের মুখে ফের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঝুঁকি নেন মহারাষ্ট্রের বিড় জেলার বাসিন্দা মীরা এখান্ডে। ভেবেছিলেন, এবার অন্তত পরিবারকে ছেলের মুখ দেখাতে পারবেন।
শনিবার মুম্বাই থেকে প্রায় ৩৮০ কিলোমিটার দূরে বিড় জেলার মাজালগাঁও সিভিল হাসপাতালে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ভর্তি হন মীরা। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সেখানেই একটি মৃত পুত্রসন্তান হয় তার। তবে এর পরে তার রক্তপাত আর বন্ধ করা যায়নি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মাজালগাঁওয়ে একটি পানের দোকান চালাতেন মীরা। অভাবের সংসার। অনাদরে, অবহেলায় সাতটি মেয়ের মধ্যে একটি মারাও গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিয়মিত পরিবারের তরফে পুত্রসন্তানের জন্য তাকে চাপ দেয়া হতো। সম্ভবত সেই চাপের মুখেই দু’বার গর্ভপাতও করান। তার পরেও পরিবারের দাবি ও ছেলের আকাঙ্ক্ষায় ফের গর্ভবতী হন মীরা।
এ ঘটনার পর হাসপাতালের তরফ থেকে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। পরিবারের লোকজনের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে মীরার দেহও।