Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৩ মঙ্গলবার, মে ২০২৫ | ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

মারধর খেয়েও কাঁদতে কাঁদতে সংবাদ সংগ্রহ নারী সাংবাদিকের, ভিডিও ভাইরাল

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ জানুয়ারী ২০১৯, ০৫:২৫ PM
আপডেট: ০৪ জানুয়ারী ২০১৯, ০৫:৫১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


বিক্ষোভের ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েও অশ্রুসিক্ত চোখে দায়িত্ব পালন করে যাওয়া এক নারীর ছবি সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভারতের সবরিমালা মন্দিরে দুই নারী প্রবেশের ঘটনায় কেরালার বিক্ষোভে এ ঘটনা ঘটে। সাহস ও পেশাদারিত্বের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দারুণভাবে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি।

মালায়ালম ভাষার চ্যানেল কাইরালি টেলিভিশনে কাজ করেন সাজিলা আলি ফাথিম। বিজেপি নেতাকর্মীদের বিক্ষোভের সময় তাকে কয়েকবার মারধর করা হয়েছে। হয়রানিরও শিকার হয়েছেন তিনি। এরপরও তিনি বিক্ষোভকারীদের ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করতে অশ্রুসিক্ত চোখে ক্যামেরা ধরে রেখেছেন। আহত সাজিলকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

গণমাধ্যমে শাজিলা বলেন, কেউ একজন আমার পিঠে সজোরে লাথি মারে। বুঝতে পারিনি কোথা থেকে লাথি মারা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি ব্যথায় নিচু হয়ে পড়লে হামলাকারীরা আমার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আমি সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে সেটি আঁকড়ে ধরে থাকি। টানাহেঁচড়ার কারণে আমি ঘাড়ে আঘাত পেয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, আমি ভয় পেয়ে কাঁদছিলাম না। বরং নিজেকে এত অসহায় লাগছিল যে আমি কান্না আটকাতে পারিনি।

‘পাঁচ-ছয়জন লোক যখন পেছন থেকে এসে আমাকে আঘাত করে, ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে এবং ঠেলে মাটিতে ফেলে দেয়, তখন আমার কী করার ছিল। আমি কিভাবে পাল্টা আঘাত করতাম?’

সাজিলা বলেন, গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের ছবি আমি ভিডিও করতে পারছি না ভেবে কাঁদছিলাম। যে কারণে আমি আবার ক্যামেরা তুলে নিই এবং সেটি চালু করে ভিডিও শুরু করি। আমি চাচ্ছিলাম না লোকজন আমার কষ্টের বিষয়টি বুঝতে পারুক। তাই আমি ক্যামেরার পেছনে মুখ লুকানোর চেষ্টা করছিলাম।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার ভোরে সবরিমালা মন্দিরে ঋতুমতী দুই নারী প্রবেশের ঘটনায় কেরলার বিভিন্ন শহরে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। শতাব্দী প্রাচীন ভারতের এ মন্দিরটিতে প্রথম থেকেই ঋতুমতী নারীদের প্রবেশ নিষেধ ছিল, যা নিয়ে নারীবাদী সংগঠনগুলোর দীর্ঘ আন্দোলন করে আসছিলেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর ভারতের সুপ্রিমকোর্ট এক আদেশে ওই নিষেধাজ্ঞাকে অবৈধ অ্যাখ্যা দিয়ে তা তুলে নেয়ার নির্দেশ দেন। এরপর গত বুধবার ভোরে ৪০ বছরের বিন্দু আম্মিনি ও ৩৯ বছরের কনকা দুর্গামন্দিরে ঢুকে ইতিহাস সৃষ্টি করেন। তার পরই রাজ্যজুড়ে শুরু হয় তুলকালাম। বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে ভাংচুর, বিক্ষোভ শুরু করে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা। ওই দিন প্রাদেশিক রাজধানী থিরুভানান্থাপুরামে একটি সঙ্গ পরিবারের বিক্ষোভের ছবি সংগ্রহ করতে সেখানে যান সাজিলা। একপর্যায়ে সেখানে বিক্ষোভকারীদের হামলার শিকার হন এই নারী সাংবাদিক।

Bootstrap Image Preview