এবার অনেকটা স্বাভাবিক নিয়মেই এসেছে শীত। তালা উপজেলায় নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই মিলেছে শীতের আমেজ। তবে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে শীত জেঁকে বসেছে। তাপমাত্রাও কমতে শুরু করেছে। ভোরে আকাশে হালকা মেঘ ও কুয়াশা থাকায় সকাল থেকেই আজ ঠাণ্ডা পড়ছে।
আজকাল বিকেলের দিকে আকাশে রোদ থাকায় শীত কম অনুভূত হয়। তবে সূর্যাস্তের পর আবারও ঠাণ্ডা বাতাস বইতে শুরু হওয়ায় ঠাণ্ডায় গুটিশুটি হয়ে পড়েছেন ছিন্নমূল মানুষগুলো। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে ছিন্নমূল মানুষরা শীতে কাতর হয়ে পড়েছেন এখনই। শীত সহ্য করতে না পেরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে আবাল বৃদ্ধ থেকে শিশুরাও।
এদিকে গতকাল শুক্রবার উপজেলা সদরে ও বিভিন্ন সাথানে সন্ধ্যার পর খড়-কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে৷ এরই মধ্যে বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়েছে তা সাধারন খেটে খাওয়া মানুষের কাছে পৌঁছানোর আগের ফুরিয়ে যাচ্ছে।
তালা উপজেলা হাসপাতালের ডাক্তার জানান,শীতে হঠাৎই ঠাণ্ডা বেড়েছে। তাই হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি। আক্রান্তদের বেশিরভাগই ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, হৃদরোগ, অ্যাজমা নিয়ে হাসপাতালে আসছেন বলেও জানান এই চিকিৎসক।
জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, কয়েকদিন থেকেই তাপমাত্রা নামছে। জেলায় গত তিনদিন সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ডিসেম্বর ছিল ১২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দশমিক ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে পরিসংখ্যানই বলছে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমছে।
সাধারণত তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মৃদু, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মাঝারি ও ৬ এর নিচে নামলে তীব্র শৈত্য প্রবাহ বলা হয়ে থাকে। সেই হিসেবে এখনও মৃদু শৈত্য প্রবাহ শুরু হয়নি। তবে ১০ দশমিক ৬ দশমিক ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় শীত জেঁকে বসেছে একথা বলাই যায়।তবে এই অবস্থায় চলতে থাকলে জেলায় ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের একটু নিচে তাপমাত্রা চলে আসতে পারে। তারপরে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে আবার বৃদ্ধি পাবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, শীত পড়ার অনেক কারণ রয়েছে। এর একটি হলো সাইবেরিয়ার বাতাস। তবে বাংলাদেশে পৌঁছানোর আগেই এই বাতাসে শীতের মাত্রা কমে যায়। কিন্তু এ সময় সাইবেরিয়ার বাতাসে যে মাত্রার ঠাণ্ডা থাকে সেটি এ মানুষের কাছে সহনীয় নয়। জেলায় শীতের তীব্রতা এতটাই বেশি হতে পরে যে রাতের বেলায় আকাশ থেকে ঝরতে পারে বৃষ্টির মতো কুয়াশা। এর সঙ্গে উত্তর দিক থেকে আসছে কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস।