Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ মঙ্গলবার, মে ২০২৫ | ২২ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

শিক্ষক ও ছাত্রলীগের মুখোমুখি অবস্থানে অচলাবস্থায় যবিপ্রবি'র শিক্ষা কার্যক্রম

আক্তার হোসেন, যবিপ্রবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারী ২০১৯, ১২:০২ PM
আপডেট: ২১ জানুয়ারী ২০১৯, ১২:০২ PM

bdmorning Image Preview


যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) অচলাবস্থা আজো কাটেনি। শিক্ষক ও ছাত্রলীগের মুখোমুখি অবস্থানে ক্যাম্পাস অচল হয়ে যায়। পরবর্তীতে ছাত্রলীগের একাংশ ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দিলেও অব্যাহত রয়েছে শিক্ষকদের আন্দোলন। ফলে ১১ দিন ধরে বন্ধ আছে শিক্ষা কার্যক্রম।

পরিস্থিতি উত্তরণের উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি গতকাল রবিবার কাজ শুরু করেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবিরের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি আগামী ৩০ জানুয়ারি প্রতিবেদন দেবেন। শিক্ষক সমিতি দাবি আদায়ে সোমবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন জানান, আগামী ২৪ জানুয়ারি যশোরের ৬ জন সংসদ সদস্যসহ প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বৈঠক করবে। বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক বিরাজমান অচলাবস্থা বিষয়টি সংসদ সদস্য ও বিশিষ্ট নাগরিকদের অবহিত করবেন এবং তাদের কাছ থেকে এর উত্তরণে করণীয় বিষয়ে ধারণা নেওয়া হবে। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকট কেটে যাবে বলে তিনি আশা করেন।

এদিকে যবিপ্রবিতে শিক্ষক সমিতির ডাকে ক্লাস বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষকদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃষ্ট অচলাবস্থার জন্য দায়ী শিক্ষার্থীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবেন না। অন্যদিকে ছাত্রলীগের একাংশ তাদের ৫ দফা দাবির প্রতি অনড় আছে। এ অবস্থায় গত ১২ জানুয়ারি থেকে অচল রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। তাবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চান।

যবিপ্রবির শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মোহাম্মদ নাজমুল হাসান জানান, রবিবার তাদের বেঁধে দেয়া আল্টিমেটামের সময়সূচি শেষ হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ১১টায় পরবর্তী করণীয় নিয়ে সমিতির সভা হবে। সভা থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ড. মোহাম্মদ নাজমুল হাসান বলেন, শিক্ষক সমিতির মানববন্ধনে হামলায় যারা সরাসরি জড়িত তাদের বহিষ্কার এবং ভিসিহসহ সমিতি নেতৃবৃন্দের নামের মামলা প্রত্যাহার ও সমিতির সভাপতিকে হুমকির ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে তারা আন্দোলনে আছেন। এর একটি সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

অন্যদিকে শেখ হাসিনা হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়রা আজমিরা এরিন বলেন, প্রফেসর ড. ইকবাল কবীর জাহিদের অপসারণ, ছাত্রীদের মানহানিকর এন্টি র‌্যাগিং পোস্টার নামিয়ে ফেলা, ‘বিতর্কিত’ প্রাচ্যসংঘের আয়োজনে কোনো অনুষ্ঠান না করা, সেমিস্টার ও ল্যাবরেটরি ফি এবং জরিমানার হার কমানো ও বিনা রশিদে কোনো টাকা না নেয়ার বিধান করাসহ ৫ দফা দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। আশা করছি আমাদের দাবি পূরণ হবে।

উল্লেখ্য, গেল ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে ছাত্রলীগের উদ্যোগে টাঙানো হয় বাঁশ ও কাপড়ের তৈরি নৌকা। কয়েকদিন আগে ওই নৌকাটি নামিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেখানে ঝুলিয়েছে র‌্যাগিংবিরোধী ব্যানার। এর প্রতিবাদে ছাত্রলীগের ব্যানারে ক্যাম্পাসে শুরু হয় মিছিল মিটিং। তারা ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহীদকে দায়ী করে তার শাস্তি দাবি করেন।

এরপর পাল্টা কর্মসূচিতে নামেন শিক্ষক সমিতিও। তারা পুরো ঘটনাকে ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে ক্লাস-পরীক্ষা গ্রহণ না করার ঘোষণা দেন। শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে থানায় জিডিও করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল সোমবার বাদী হয়ে যশোর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেন ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. ইকবাল কবির জাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে ৫শ’ কোটি ও ১০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করে দু’টি মামলা করেন। যশোর চিফ জুডিশিয়াল আমলি আদালতের বিচারক মামলা দু’টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন যশোর কোতয়ালী থানার ওসিকে।

Bootstrap Image Preview