সদ্য সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে বিদায় এবং নবনিযুক্ত অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে বরণ করে নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বিদায়ী অনুষ্ঠানে নতুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে উদ্দেশ্য করে সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেছেন, ‘আপনি নেতৃত্ব নেন। আমি আপনার পেছনে আছি’।
বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) ‘সাবেক অর্থমন্ত্রীকে বিদায়ী শুভেচ্ছা ও বর্তমান অর্থমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা স্বাগতম’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে আবুল মাল আবদুল মুহিত এ কথা বলেন।
আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আমি চলে যাব এটা আমি আগে থেকেই জানতাম। তাই আগে থেকেই আমি কিছু পদক্ষেপ নিয়ে রেখেছি। যেমন প্রতিবারই আমরা বাজেট আলোচনা জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে শুরু করতাম। কিন্তু আমি এবার ডিসেম্বরে বাজেট আলোচনা শুরু করে দিয়েছি।
নতুন অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মুহিত বলেন, আগামী অর্থবছরের জন্য একটা বাজেট কাঠামো আমি তৈরি করেছি। আপনি এটা অর্থমন্ত্রণালয়ে পাবেন। এটা ধরে আপনি বাজেট করতে পারবেন।
‘আমি ২০০১ সালেই অবসর নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরে চিন্তা করলাম শৈশব বয়সে এত এত স্বপ্ন দেখতাম। সেই স্বপ্নগুলোর কী হবে’। যোগ করেন সাবেক অর্থমন্ত্রী।
এসময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাবেক এ অর্থমন্ত্রী বলেন, আজকে আমি কিছু অঙ্গীকার করছি। এগুলো আগামী বছরের বাজেটে তৈরি করে রেখে এসেছি। আপনি চাইলে এটা ধরে কাজ করতে পারবেন। এছাড়া যখনই প্রয়োজন হবে সহযোগিতার জন্য আসবেন। আমি ফ্রি থাকবো।
তিনি নতুন অর্থমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়ে আরো বলেন, আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রকে রিক্রুট করতে পারেন। তারা জরিপ করুক। ঢাকাতেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা জরিপ করবে। কে কত টাকার মালিক। কতগুলো বাড়ির মালিক। মানুষের চরিত্রে পরিবর্তন আনার জন্য এ পদক্ষেপ নিতে পারেন। আপনি এটার নেতৃত্ব নেন। আমি আপনার পেছনে আছি। আপনি চাইলে করদাতার সংখ্যা ১ কোটি করতে পারবেন।
সাবেক অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, আমি সাহিত্যের ছাত্র ছিলাম। পড়াশুনা শেষ করে ১৯৫৬ সালে সিভিল সার্ভিসে যোগ দিলাম। সে সময়কার রেলওয়ে ডিপার্টমেন্টে যোগ দিই। পরে এটা পূর্ণমন্ত্রণালয় হয়। সেই চাকরির সুবাদে ১৯৬২ সালে জাতীয় বাজেটে অন্তর্ভূক্তির জন্য রেলওয়ে বাজেট করার দায়িত্ব পড়ে আমার ওপর। এরপর ১৯৬২ সালের পর থেকে আমাকে প্ল্যানিং আর ফাইন্যান্সের বাইরে আর কোনো কাজ করতে হয় নাই।
মুহিত আরও বলেন, গত ১০ বছরে আমরা যা অর্জন করেছি এর পেছনে আছেন ১ জন। তিনি হলেন মাননীয় প্রধামন্ত্রী। তিনি আমাকে বুড়ো বয়সে দায়িত্ব দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর আচরণ অনেক প্রোগ্রেসিভ ছিল। এটাও বাংলাদেশের উন্নয়নের অনেক বড় একটা কারণ।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে নবনিযুক্ত অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এনবিআর চত্বরে গেলে তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানিয়ে নিজ কক্ষে নিয়ে আসেন মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। এর প্রায় পাঁচ মিনিট পর একইভাবে সদ্য সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে নিজ কক্ষে নিয়ে আসেন তিনি। এরপরই বিদায়-বরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আবুল মাল আবদুল মুহিতের বিষয়ে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য দেন মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। অবসর নিলেও তিনি এনবিআরের অভিভাবক থাকবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।