বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতির সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাসের ভিত্তিতে আগামী রবিবারের মধ্যে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে যবিপ্রবির উদ্ভূত পরিস্থিতির সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে মিটিং-মিছিল-সমাবেশসহ সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিতের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লীউন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রীসহ যশোরের সংসদ সদস্য, সুধীজনদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় খোলামেলা আলোচনা হয়।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়।
সভার শুরুতে গত ৪ জানুয়ারি থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত যবিপ্রবিতে ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন।
তার বক্তব্য শেষ হওয়ার পর উপস্থিত সংসদ সদস্যগণ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, আইনীজীবী প্রতিনিধিগণ, সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিগণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা সমাধানে তাদের মতামত পেশ করেন।
উপস্থিত সুধীজনেরা মত দেন যে, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমানে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি রাজনৈতিক। সুতরাং এ সমস্যার সমাধান রাজনৈতিকভাবেই করতে হবে।
এ সময় উপস্থিত সকলেই বিষয়টির আশু সমাধানের জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রীকে দায়িত্ব দেন এবং তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
এ সময় উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বহিরাগতদের হস্তক্ষেপের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন এবং যে কোনো দুর্দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে থাকার আশ্বাস প্রদান করেন।
তারা বলেন, যশোর একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা হওয়ায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার ঐতিহ্যের মাধ্যমে যশোরের যশ আরও বিকোশিত হতে পারে। এ জন্য তারা একসাথে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
মতবিনিময়স ভায় স্থানীয় সরকার, পল্লীউন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সকল ক্লাস, পরীক্ষা হয়। ক্লাস না হলে শিক্ষার্থীরা সেশন জটের মধ্যে পড়বেন। এতে সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। শিক্ষকদের বলবো, আপনারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করুন, ক্লাসে ফিরে যান।
এ সময় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো: নাজমুল হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা চান। তখন প্রতিমন্ত্রী পুলিশ প্রশাসনকে নিরাপত্তার বিষয়টি দেখার জন্য আহ্বান জানান।
উপস্থিত শিক্ষক প্রতিনিধিগণ আশ্বস্ত হয়ে আগামী শনিবার সাধারণ সভা করে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার বিষয়েই তিবাচক হবেন বলে মত দেন।
সভায় উপস্থিত সুধীজনেরা যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির কর্মকাণ্ড শেষ এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বিশৃঙ্খলা এড়াতে সকল ধরনের মিছিল-মিটিং-সমাবেশ এবং রাজনৈতিক কর্মকা-নিষিদ্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেন।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিলউদ্দীন, যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) ডা. নাসিরউদ্দিন, যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য ইসমত আরা সাদেক, যশোর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, যশোরবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালযের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ অব্দুস সাত্তার, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, অ্যাডভোকেট এ টিএম এনামুল হক, যশোরের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি ফারায়েজি আহমেদ সাঈদ বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খান দুলু প্রমুখ।