ভর্তি ও নিয়োগ পরীক্ষায় মূলত দুইভাবে জালিয়াতি হয়। একটি চক্র প্রশ্নফাঁস করে, অন্য চক্রটি পরীক্ষার দিন প্রশ্ন সংগ্রহ করে সমাধান বের করে। এরপর ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে তা পরীক্ষার্থীদের সরবরাহ করে বলে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) প্রধান অ্যাডিশনাল আইজিপি হিমায়েত হোসেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটি।
সিআইডি প্রধান বলেন, নিয়োগ ও ভর্তিতে প্রশ্নফাঁস এবং ডিজিটাল জালিয়াতের দুই আলাদা চক্রকে তারা আইনের আওতায় এনেছে। সর্বশেষ ডিজিটাল ডিভাইস জালিয়াত চক্রের মূল হোতা হাফিজুর রহমান হাফিজ ও মাসুদ রহমান তাজুলসহ এখন পর্যন্ত দু’টি চক্রের ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে সিআইডি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছিল। এই কাজে আমরা অনেকটাই সফল হয়েছি। সিআইডি এই পর্যন্ত ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সিআরপিসি অনুযায়ী তাদের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। এত আসামি জবানবন্দি দিয়েছে তার কোনো ইতিহাস নেই।
গত পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রশ্নফাঁস দেশ তুমুল আলোচিত বিষয়। তবে গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন আগেভাগে আসেনি সামাজিক মাধ্যমে। এর আগে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে প্রচুর গ্রেফতার হয় বলে জানান তিনি।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি হলে অভিযান চালিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে রানা ও মামুন নামের দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করা হয়।
গ্রেফতারদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য থেকে পরীক্ষার হল থেকে গ্রেফতার করা হয় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী রাফিকে। এরপর গ্রেফতারকৃতদের তথ্যমতে প্রযুক্তি অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রশ্ন পেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হওয়া সাত শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
এই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায় পরীক্ষার আগেই প্রেস থেকে ফাঁস হয়ে যেত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন। এই চক্রের মাস্টারমাইন্ড নাটোরের ক্রীড়া কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান এছামী, প্রেস কর্মচারী খান বাহাদুর, তার আত্মীয় সাইফুল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বনি ও মারুফসহ ২৮ জন। তাদের গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে চক্রের মূলোৎপাটন করা হয়।
সংঘবদ্ধ এই চক্রটি ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে এবং সাভারের একটি বাসায় আগের রাতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পড়াতেন বলে তিনি জানান।