সড়ক দুর্ঘটনাকে জিরো টলারেন্স হিসেবে নেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. এ কে এম শাহ নাওয়াজ। তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উন্নয়ন চাই।
আজ বৃহস্পতিবার বিডিমর্নিং এর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হলো প্রত্যাশা কী এমন প্রশ্নের জবাবে এই বুদ্ধিজীবী বলেন, গণতান্ত্রিকধারা অব্যাহতভাবে চলুক সেই জন্যেই জাতীয় সংসদ। প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছে। ঐক্যফ্রন্ট ছাড়া বাকী দলগুলো অধিবেশনে অংশ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন 'সবাই কথা বলার ক্ষেত্রে সমান সুযোগ পাবে' বিষয়টি ভালো লেগেছে।
তিনি বলেন, বিরোধীদল যৌক্তিক সমালোচনা করবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করি। সমালোচনার জন্যে সমালোচনা করা যেন না হয়।
ঐক্যফ্রন্ট ছাড়া নির্বাচিত বাকী দলগুলো সংসদ অধিবেশনে অংশ নিয়েছে এ ক্ষেত্রে ঐক্যফ্রন্টের কি করা দরকার এই প্রশ্নের জবাবে ড. শাহ নাওয়াজ বলেন, ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধিদের ভোটারদের সম্মান করা দরকার। সংখ্যা যাইহোক তাদেরকে যারা ভোট দিয়েছেন তারা তো সংসদে যাওয়ার জন্যেই তাদেরকে ভোট দিয়েছেন। ভোটারদের সম্মান তাদের রক্ষা করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, কাজ করতে হবে। শুধু শুধু কথা বলে কিছু হবে না। মানুষের জন্যে, দেশের জন্য কাজ করতে হবে।
উপজেলা নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট অংশ নেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে বিষয়টি কীভাবে দেখছেন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা অযৌক্তিক চিন্তা। কারণ রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠিত হয়। মানুষের কাছে যায়। নিজেদের কথাগুলো বলতে পারে। এখন যদি নির্বাচনই না করে তবে কিভাবে জনগণের সাথে তারা সম্পৃক্ত হবে?
এমন চিন্তা থেকে ফিরে আসলে ভালো হয়।
'সংসদে আমাদের অবস্থান কী হবে' ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের এই বক্তব্য সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি মেনন সাহেব হতাশা থেকে বলেছেন। কেননা একসাথে দীর্ঘদিন যাবত কাজ করছেন এখন মন্ত্রিত্বে নেই তাই হতাশা বাসা বেধেছে। ১৪ দল তো মহাজোটকে ক্ষমতায় এনেছে তাদের হিসাব-নিকাশ কিছু তো থাকে।
কোন দলই ইশতেহারকে পরবর্তীতে আর গুরুত্ব দেয় না বা মনে রাখে না এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের কাছে প্রত্যাশা কী এই প্রশ্নে ড. শাহ নাওয়াজ বলেন, আওয়ামী লীগের ইশতেহারকে গুরুত্ব দিতে হবে। সেখানে যা বলেছে তা মনিটরিং করতে হবে কতটুকু কাজ হলো? তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে যেমন জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে এমনই করে সড়ক দুর্ঘটনায় এখন জিরো টলারেন্স ঘোষণা সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় অসংখ্য মানুষ মৃত্যুর কোলো ঢলে পড়ছে। অনেকেই আহত হচ্ছে। এটি নির্মূলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে এসেছিল এটিকে গুরুত্ব দেয়া দরকার।
আওয়ামী লীগের ইশতেহারের ১৯ নম্বার পয়েন্ট ছিল সড়ক দূর্ঘটনাকে নিয়ন্ত্রণ করা।
এটিকে অধিক গুরুত্ব দেয়ার সময় এসেছে।
তিনি এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের শুভ কামনা জানিয়ে বলেন, শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি-২০১৯) থেকে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তারা যেন নিরাপদে পরীক্ষা দিতে পারে সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে তাদের নাগরিক সেবাগুলো যেন আরো ভালোভাবে দেয়া হয়। প্রশ্নফাঁসের মতো কোন ধরনের অপ্রীতিকর, অসৎ কাজ যেন আর সৃষ্টি না হয় সেদিকে প্রশাসনকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
তবে তিনি পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার বিরোধিতা করে বলেন, এতো পরীক্ষা কেন? পরীক্ষা পরীক্ষা করে জ্ঞান আহরণের পথ বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এতো পরীক্ষার প্রয়োজন নেই সৃজনশীল পরীক্ষার নামে কোমলমতিদের জ্ঞানার্জনের পথে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এগুলো তুলে দেয়া দরকার।