Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ মঙ্গলবার, মে ২০২৫ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

এসএসসি পরীক্ষার আগেই ঝরে গেল সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষার্থী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারী ২০১৯, ০৯:৫৯ PM
আপডেট: ৩১ জানুয়ারী ২০১৯, ০৯:৫৯ PM

bdmorning Image Preview


শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা। মাধ্যমিক পর্যায়ে দুই বছরেই ঝরে পড়েছে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষার্থী।

যারা এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন, তাদের সঙ্গে নবম শ্রেণিতে নিবন্ধন করেছিল ২২ লাখ ৮৭ হাজার ৩২৩ শিক্ষার্র্থী। কিন্তু নিয়মিত হিসেবে এতে অংশ নিচ্ছে ১৭ লাখ ৪০ হাজার ৯৩৭ জন। বাকি ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩৮৬ জন শিক্ষার স্রোতধারা থেকে হারিয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এসএসসি পরীক্ষা সামনে রেখে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। এতে এসব তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

এতে সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষার্থী সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এসব শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে বলা যাবে না। সাধারণত টেস্ট পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণদের পরীক্ষা দেয়ার জন্য ফরম পূরণের সুযোগ দেয়া হয় না। হয়তো অনেকে টেস্ট পরীক্ষায় বিভিন্ন বিষয়ে ফেল করেছে।

ফেল করা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় পাঠানোর ব্যাপারে এবার দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) অনেক তৎপর ছিল। সব মিলে একটি বড় সংখ্যা ফরমপূরণের পরও পরীক্ষায় বসতে পারেনি। তবে ঠিক কী কারণে এমনটি ঘটল, তা খোঁজ নেয়া হবে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকরা যাতে আরও মনোযোগী হন সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী পরীক্ষা-সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য ও পদক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি এবার প্রশ্নফাঁসের কোনো সুযোগ নেই। বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ায় গত জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয় নি। এ কারণে সেই একই পদক্ষেপ এবারও নেয়া হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রশ্নপত্র পাঠানোর ক্ষেত্রে গতানুগতিক খামের পরিবর্তে এল্যুমিনিয়াম ফয়েল খাম। এতে প্রশ্নপত্রের প্যাকেটের নিরাপত্তা আরও বেড়েছে।

তিনি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের কোনো সুযোগ নেই। তাই কেউ গুজবের পেছনে ছুটে যেন বিভ্রান্ত না হন। কেননা, গত বছরের আগে পর্যন্ত প্রশ্ন ফাঁসের যে দাবি উঠেছিল, তার ৮০ ভাগই ছিল গুজব। আর গত বছর থেকে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে না।

শিক্ষামন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, এবার সারাদেশে মোট ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। তাদের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার্থী ১৭ লাখ ১০২ জন, দাখিল ৩ লাখ ১০ হাজার ১৭২ জন পরীক্ষার্থী এবং এসএসসি ভোকেশনালে ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৯ জন। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৭ লাখ ৪০ হাজার ৯৩৭ জন নিয়মিত। বাকিদের কেউ গত বছর এক বিষয়ে, কেউবা দুই ও ততোধিক বিষয়ে ফেল করেছিল।

সব মিলে অনিয়মিত পরীক্ষার্থী ৩ লাখ ৯১ হাজার ৫৪ জন আর ফল উন্নয়ন প্রার্থী ৩ হাজার ৩৪২ জন। গত বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ৪৩৪ জন। এরমধ্যে ছাত্রী ৫৬ হাজার ২০৫ জন। বাকি ৪৭ হাজার ২২৯ জন ছাত্র। এবার বিজ্ঞানে পরীক্ষার্থী বেড়েছে।

এ বছর ৫ লাখ ৪১ হাজার ৩৫৩ জন বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে। গত বছর বিজ্ঞানে পরীক্ষার্থী ছিল ৫ লাখ ৩ হাজার ৬২৭ জন। মোট ৩ হাজার ৪৯৭ কেন্দ্রে হচ্ছে এ পরীক্ষা। ২৮ হাজার ৬৮২ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২৭ জানুয়ারি থেকে কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সরকারি এই নির্দেশ বাস্তবায়নে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন যেকোনো ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হলে তার কিছু ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক থাকে। তবে সরকার ইতিবাচক ফলাফলের জন্যই নতুন পদ্ধতি প্রবর্তন করে থাকে। শিক্ষার ব্যাপারে যেসব দিক সংস্কার বা হালনাগাদ করণের দাবি আছে, সেগুলো সম্পর্কে আমরা সচেতন।

আগামীতে যা করা হবে, শিক্ষার্থীরা তা থেকে যেন ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উপযোগী হিসেবে গড়ে উঠে সেটি বিবেচনায় রাখা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক প্রমুখ।

 

Bootstrap Image Preview