ক্রিকেট টেস্ট খেলুড়ে দেশ গুলোর মধ্যে বাংলাদেশের প্রথম জয় আসে পাকিস্তানের বিপক্ষে। তারে কিনা বিশ্বকাপের আসরে। সেবার আয়োজক ইংল্যান্ডের মাটিতে গ্রুপ পর্বের লড়াইয়ে শিরোপার দাবিদ্বার পাকিস্তানকে ৬২ রানে হারিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশের এমন জয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি খালিদ মেহমুদ।
১৯৯৯ বিশ্বকাপে বি গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল চার টেস্ট খেলুড়ে দেশ নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং স্কটল্যান্ড। ভয়ংকর এই গ্রপে বাংলাদেশ স্বাগতিক স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্ববাসীকে জানান দিয়ে দেয় যে ক্রিকেট বিশ্বে এক নতুন শক্তির আবির্ভাব ঘটছে। এই জয়ের পর দলটির ক্যাপ্টেন আমিনুল ইসলাম হঠাৎই ঘোষনা দিয়ে দেন একটি টেস্ট প্লেয়িং নেশনকে আমরা হারাবো। এরপর অধিনায়কের এই বক্তব্য বিশ্ব মিড়িয়ায় হাসির পাত্র হয়েছে বাংলাদেশ দল।
অবশেষে ১৯৯৯ সালের ৩১শে মে সেই হাসির পাত্র দলটি সেই অসাধ্য সাধন করে দেখালো। নর্থহ্যাম্পটনে বাংলাদেশ মুখোমুখি হয় তাদের চিরশত্রু পাকিস্তানের বিপক্ষে। খালেদ মাহমুদ সুজনের অলরাউন্ড পার্ফরমেন্সের বদৌলতে পাকি বধ তাও বিশ্বকাপের মঞ্চে। খালেদ মাহমুদ ৩১ রানে নেন ৩ উইকেট। এছাড়া আকরাম খান ৬২ বল থেকে ৪২ রানের ইনিস খেলেন।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে এখনো সে ম্যাচকে ধরা হয় সবচেয়ে বড় শক্তির অভ্যুত্থান হিসেবে। তবে সে ঐতিহাসিক মুহূর্তে কালি মাখতে চাইছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের সাবেক বোর্ড সভাপতি খালিদ মেহমুদ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সে হারকে ‘সন্দেহজনক’ বলছেন এই কর্মকর্তা।
বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের পর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড সভাপতির পদ খোয়ান খালিদ মেহমুদ। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ধরাশায়ী হওয়াতেই এমন দশা তাঁর। তবে দেড় যুগ পর আলোচনা করতে গিয়ে সে ফাইনাল হয়, বাংলাদেশ ম্যাচটাই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে তাঁর কাছে। বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় অঘটন বলে এখনো আলোচিত সে ঘটনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে পাকিস্তানের টিভি চ্যানেল জিও নিউজের অনুষ্ঠান স্কোরে। সে অনুষ্ঠানেই সেই বিশ্বকাপের স্কোয়াডের খেলোয়াড়দের গায়ে ‘সন্দেহজনক’ ট্যাগ লাগিয়ে দিয়েছেন মেহমুদ।
মেহমুদের দাবি বিশ্বকাপের আগেই দলের খেলোয়াড়দের আচরণ নিয়ে সন্দেহের কথা জানিয়েছিলেন কোচ জাভেদ মিয়াঁদাদ। বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে সাফল্য এনে দেওয়া মিয়াঁদাদের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন মেহমুদ। সাবেক বোর্ড সভাপতির দাবি সে বছর ১২ এপ্রিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে পাকিস্তানের হারে খেলোয়াড়দের ‘সন্দেহজনক’ আচরণ দেখেই নাকি মিয়াঁদাদ পদত্যাগ করেছেন। খালিদ মেহমুদের দাবি, তাঁরও তেমন সন্দেহ জেগেছিল।
মেহমুদের দাবি, ওয়াসিম আকরামের অধীনে বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের হারও অমন ‘সন্দেহজনক’। তাঁর ধারণা পাকিস্তান দলের যে স্কোয়াড তাতে এমন হার প্রশ্ন তুলবেই। এই অঘটন তাঁকে চিন্তিত ও রাগান্বিত করেছিল। এত এত তারকা থাকার পরও পাকিস্তানের অমন হারের সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত ছিল বলেই মনে করেন মেহমুদ।
অবশ্য পাকিস্তানের এরকম আচরণ নতুন নয়। ২০১৫ সালে সাউথ আফ্রিকা ও ভারতকে হারাবার পর সেই জয়গুলোকেও সন্দেহজনক মনে করেছে পাকিস্তানী কমেন্টেটর রমিজ রাজা।