Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৮ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৫ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

সরকারি তিতুমীর কলেজ ও বিতর্ক ক্লাব

ইলিয়াস শান্ত, তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৫:৫৮ PM
আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৫:৪৬ PM

bdmorning Image Preview


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাতটি কলেজের অন্যতম, কলেজভিত্তিক দেশীয় অনার্স-মাস্টার্স সম্মানের পুরোধা, আদর্শ মানুষ গড়ার প্রতিচ্ছবি, ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সরকারি তিতুমীর কলেজ একটি উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত নাম। কলেজের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে বছরের পর বছর ধরে আপন গৌরব আর সুখ্যাতির মাধ্যমে তিতুমীর মাটিতে আগত সকল শিক্ষার্থীকে বিরামহীনভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এমন একটি কলেজের নাম সরকারি তিতুমীর কলেজ।

১৯৬৮ সালের ৭ মে। সে সময়ের স্থানীয় কিছু মানুষের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় কলেজটি। তৎকালীন পাক শাসনামলে এটি 'জিন্নাহ কলেজ' নামে পরিচিত হতে থাকে। পরবর্তীতে ৩ মার্চ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রাক্কালে জিন্নাহ নাম মুছে ফেলে এই কলেজটির নামকরণ করা হয় শহীদ তিতুমীরের নামানুসারে। সে সময় থেকে আজ পর্যন্ত দীর্ঘ এ পথ চলা।

অনার্স সম্মানের পাশাপাশি ডিগ্রি কোর্সটি চালু থাকলেও সম্প্রতি সময়ে বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকে অর্থাৎ ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ডিগ্রি কোর্স বিলুপ্ত করে অনার্স সম্মানের সাথে মিলিয়ে দেয়া হয়েছে। ১৭ ফ্রেব্রুয়ারি ২০১৭ এর আগ পর্যন্ত কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিলো। সর্বমোট ২২টি ডিপার্টমেন্ট মিলে অনার্স এবং মাস্টার্স কারিকুলামে ৬৫ হাজারেও অধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে যাচ্ছে। যা সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়ার কলেজভিত্তিক অনার্স-মাস্টার্স সম্মানের সবচেয়ে বড় জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র রূপে আলোচনায় এসেছে। কলেজের পুরো কার্যক্রম রক্ষণাবেক্ষণে সর্বমোট ২৫০ জনের মতো লোকজন অবিরাম শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন।

বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে তিতুমীর কলেজের এমন ক্যাম্পাস সম্পর্কে অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান সূর্যের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিডিমর্নিংকে জানান, “তিতুমীরের মাটিতে এমন বিশাল সংখ্যক মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে নিজকে আবিষ্কার করতে পেরে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হিসেবে আমি খুব ভালো অনুভব করছি। আমি মনে করি এ বিশালাকার শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যাম্পাসের আকার আয়তন খুবই সংকীর্ণ।”

তিনি আরো বলেন, “শিক্ষার্থীর আধিক্যের কারণে আমাদের ডিপার্টমেন্টে একাধিক সেকশনে ভাগ করা হয়েছে। তবুও একজন শিক্ষার্থী হিসেবে এটাকে উপযুক্ত সমাধান বলে মনে করছি না। এ ব্যাপারে নাঈম সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আকার আয়তনের দিক থেকে আরো সম্প্রাসারণ দরকার বলে আমি মনে করি।”

তিতুমীর একটি কলেজ হিসেবেও এর প্রত্যেক শিক্ষার্থী পড়াশোনার আর জ্ঞান চর্চার পাশাপাশি ক্রীড়া, বিনোদন এবং সংস্কৃতি মনা হয়ে থাকে। তিতুমীরের ক্যাম্পাসে কর্তৃপক্ষ অনুমোদিত প্রায় আট থেকে দশটির মতো কার্যকরী সংগঠন রয়েছে। শুদ্ধস্বর কবিতা মঞ্চ, বাধন, বিএনসিসি এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। তবে ৭ মার্চ ২০১৭ তারিখে তিতুমীরের মাটিতে আত্মপ্রকাশ করলো আরো একটি সংগঠন ‘সরকারি তিতুমীর কলেজ বিতর্ক ক্লাব’ নামে। এর আগে তিতুমীর কলেজে বিতর্ক ক্লাবের কোন কার্যক্রম ছিল না। বড় বড় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসভিত্তিক বিতর্ক ক্লাবের আদলে প্রতিষ্ঠিত হলেও এটি প্রতিষ্ঠার পেছনে যিনি মহানায়কের ভূমিকায় ছিলেন; তিনি আর কেউ নন, তিতুমীর কলেজের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী, সরকারি তিতুমীর কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের মেধাবি শিক্ষার্থী মাহবুব হাসান রিপন।

মা. হা. রিপন এমন একটি ব্যক্তিত্ব, যিনি ২০১৪ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা সুযোগ বন্ধের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। রিপনের এছাড়া আরো একটি বড় পরিচয় হচ্ছে তিনি 'প্রথম প্রহর' নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন।

সম্প্রতি নতুন বছর উপলক্ষে, নতুন নতুন বিতার্কিকের সন্ধানে তিতুমীরের বিতর্ক ক্লাবে সদস্য সংগ্রহ চলছে। ২৯ জানুয়ারি থেকে চলে আসা সদস্য সংগ্রহ আগামীকাল ১৪এ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। তিতুমীর কলেজের শহীদ বরকত মিলনায়তন (বিজয় বিতর্ক মঞ্চ) এর সামনে অবস্থিত বুথ থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত সদস্য ফরম সংগ্রহ করা যাবে। অর্থাৎ নতুন ফরম পূরন এবং জমা দেয়ার শেষ সময় আগামী ১৪এ ফেব্রুয়ারি রোজ বৃহঃবার বিকেল ৩টায় শেষ হবে।

বিডিমর্নিং বিতর্ক ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহবুব হাসান রিপনের একান্ত সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। তার কাছ থেকে বিতর্ক ক্লাবের আরো আনুসাঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে।

রিপন বলেন, ‘তিতুমীরে ছড়িয়ে পড়ুক বিতর্কের শুদ্ধতা’ এ স্লোগান নিয়ে বিতর্ক ক্লাবের পথ চলা। তিতুমীরের আলো বাতাসে বয়ে যাক বিতর্কের হাওয়া। ক্যাম্পাস থেকে ক্যাম্পাস এবং জাতীয় পর্যায়েও তিতুমীরের বিতর্ক ক্লাবকে পৌঁছে দিতে চান মাহবুব হাসান রিপন।

রিপন আরো জানান, সরকারি তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সম্মানিত সভাপতি রিপন মিয়া ও সম্প্রতি বিতর্ক ক্লাবের সদস্য ফরম পূরণ করেছেন। এটা মাহবুব হাসান রিপনের বিতর্ক ক্লাবের অন্যতম একটা পাওয়া বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

Bootstrap Image Preview