ঠাকুরগাঁওয়ে বিজিবির গুলিতে চার গ্রামবাসী নিহতের প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন করেছেন ঠাকুরগাঁও জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে হামলায় নিহত ও আহতদের ভুক্তভোগী পরিবারের ক্ষতিপূরণসহ হামলায় জড়িত বিজিবি সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, বিপথগামী বিজিবি সদস্যদের শাস্তি নিশ্চিত, বিজিবির দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ সাত দফা দাবি জানানো হয়।
দাবিগুলো হলো- নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত সাপেক্ষে বিপথগামী বিজিবি সদস্যদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, আহতদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে, সীমান্তে সকল প্রকার মাদক ও গরু চোরাচালান বন্ধ করতে হবে এবং এর সাথে জড়িতদের শাস্তি দিতে হবে, সীমান্ত এলাকায় স্থানীয় মানুষ ও বিজিবির শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে, পুলিশ কেন গ্রামবাসীর মামলা গ্রহণ করেনি তার জবাবদিহি করতে হবে এবং বিজিবির দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
মানববন্ধনে জেলা সমিতির সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, বিজিবি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জনগণের সাথে বৈরিতা পোষণ করে আসছেন। স্থানীয়ভাবে ইয়াবা, গরু ও অন্যান্য পণ্য পাচারসহ যাবতীয় চোরাকারবারীতে বিজিবির সংশ্লিষ্টতা থাকে। ঘুষের মাধ্যমে তারা চোরাকারবারীদের সহযোগিতা করে থাকে। লোক দেখানো নিরাপত্তা দিতে গিয়ে বার বার এলাকার মানুষের ওপর নির্বিচারে হামলা চালায় তারা।
তিনি আরও বলেন, যে দেশে মানুষের কষ্টের অর্থে লালিত সীমান্তরক্ষীদের গুলিতে দেশের মালিক জনগণ নিহত হয়েছে। এটা নৈরাজ্য ছাড়া আর কী হতে পারে?’
জেলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ঠাকুরগাঁও জেলা সমিতির সাবেক সভাপতি মাসুদ রানা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় রায় প্রমুখ। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও হলের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ঠাকুরগাঁওয়ে গরু জব্দ নিয়ে বিজিবি ও গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৪ গ্রামবাসী নিহত হয়। ঘটনায় আহত হয় অন্তত ১৫ জন। ঘটনার দিন জেলার হরিপুর উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামে চোরাই গরু সন্দেহে বিজিবি গ্রামবাসীদের সাথে তর্কে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে গ্রামবাসীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে বিজিবি সদস্যরা এলোপাথাড়ি গুলি ছোঁড়লে ঘটনাস্থলেই ২ জন নিহত হয়। গুরুতর অবস্থায় ১৬ জনকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়ার পথে আরো ২ জনের মৃত্যু হয়।