আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।
আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘খুব সঙ্গতভাবেই স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এলেম, দেখলাম, জয় করলাম-এমনি করে হয়নি। দীর্ঘকাল জেল জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে অনেক চিন্তা-ভাবনা করে ধাপে ধাপে সংগ্রামে সাফল্য লাভ করেই ‘জাতির পিতা’র অভিধান অর্জন করেছেন তিনি। তার সাধনায় কোন ফাঁক ও ফাঁকি ছিল না।’
তিনি আরো বলেন, ‘একটি জাতির জনক হওয়া খুব বড় ঘটনা নাও হতে পারে। জিন্নাহও তো পাকিস্তানের জনক, কিন্তু শত বছর ধরে ঐতিহাসিকভাবে বিকশিত কোন জাতি রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞাসম্মত কোন রাষ্ট্র তিনি প্রতিষ্ঠা করেননি। তাই বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার পার্থক্যটা আকাশ-পাতালের।’
আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উপাচার্য ড. অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আসকারী। বিশেষ অতিথি হিসেবে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সেলিম তোহা, রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান নাসের শাহারিয়ার জাহেদী মহুল।
এ ছাড়াও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, ইনফরমেশন এ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ইয়াসিন আলী, অধ্যাপক তপন কুমার জোদ্দার বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন রষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক শিরিনা বিথি।
রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান নাসের শাহারয়ার জাহেদী বলেন, ‘আমরা কেবলমাত্র রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করেছি। ৪৭ বছর পরও আমরা সামাজিক, নৈতিক ও রাাজনৈতীক মূল্যবোধ থেকে পিছিয়ে আছি। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করতে হবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্য উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, ‘বাংলা ভাষা ইউনেসকোর স্বীকৃতির পর পৃথিবীর সকল ভাষার অধিকার আদায়ে ভূমিকা হিসেবে কাজ করছে। ভাষা বিজ্ঞানীরা বলছে যেই হারে ভাষার বিনাস হচ্ছে তাতে ২১০০ সালের দিকে ৫০-৯০ শতাংশ ভাষা বিলিন হয়ে যাবে। সুতরাং আমাদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্লোগান হওয়া উচিত ‘সেইভ দ্যা ইন্ডিভিজুয়ালস ল্যাঙ্গুয়েজস’।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দিনব্যাপী বইমেলা শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে তিনদিন ব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে প্রশাসন। এর দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি ছিল এই আলোচনা সভা।