বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যান্তরে যত্রতত্র পার্কিং এবং নিরবিচ্ছিন্ন ও অবাধ প্রবেশের সুযোগ থাকায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মাঠ এখন বহিরাগত পরিবহনের দখলে পরিণত হয়েছে। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে বহিরাগত পরিবহনের যত্রতত্র পার্কিং এবং অবাধ প্রবেশের দৃশ্য বড়ই নির্মম। একটি উচ্চমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমন করুণ অবস্থা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। কিন্তু এই নির্মম সত্যের মুখোমুখি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭ হাজার শিক্ষার্থী।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মাঠ, খেলার মাঠ, মসজিদ সংলগ্ন মাঠে প্রায় প্রতিদিনই বহিরাগত পরিবহন পার্কিংয়ে সয়লাব থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী রয়েছে বেশকিছু পর্যটন কেন্দ্র। এসব পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহ নিয়ে ঘুরতে আসে পর্যটকরা। কিন্তু পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পরিবহন পার্কিংয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও বাস পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত ফি গুনতে হয় বিধায় ফ্রিতে বেছে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে।
এমনকি ঘুরতে আসা এসব পর্যটকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে খাবার দাবারসহ যাবতীয় কার্যক্রম সারে এখানে। এর কারণে ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আবর্যনা ও ময়লার স্তুপে পরিণত হচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন ঘটনা প্রতিদিনের চিত্র।
বাস পার্কিংয়ের অনুমতি মেলে সহসাই। কখনো কোন স্যার, কখনো কোন কর্মকর্তা আবার কখনো কেউ কেউ নিজের ক্ষমতা বলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে বাস রাখে। স্বয়ং উপাচার্যের অনুমতি নিয়ে বাস পার্কিং করে বলেও জানা যায়।
২১ শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে শালবন বিহারে ঘুরতে আসা পর্যটক দলের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা ৭টি বাসে প্রায় ৩০০ জন সদস্য নিয়ে এখানে ঘুরতে আসে এবং উপাচার্যের অনুমতি নিয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয় বাস পার্কিং করেছে বলে জানান।
দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মকর্তা ফখরুল বলেন, আমি তাদের ঢুকতে বাধা দেই। কিন্ত তারা ভিসি স্যারের পরিচিত, তাই স্যার অনুমতি দেওয়ায় আমি তাদের ভিতরে ঢুকতে দেই।
এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া এবং দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে একাধিক শিক্ষার্থী ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ধীরে ধীরে পাবলিক সম্পত্তিতে পরিণত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক থাকে অটোরিকশা এবং সিএনজির দখলে। তা নিয়েও দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কোন মাথাব্যথা নেই। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরের অবস্থাও ধীরে ধীরে এমন হচ্ছে যে, এক সময়ে আমাদের বাস রাখার জায়গাও পাওয়া যাবে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. সাদেক হোসেন মজুমদার বলেন, আমরা সাধারণত বাস রাখার বা ঢোকার অনুমিত দেই না। কিন্তু যখন কোন স্যার আমাদের বলে তখন আমাদের তাদের কথা রাখতে গিয়ে অনুমতি দিতে হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর এভাবে বাস রাখার কোনো অনুমতি নেই। আমি এখনি খোঁজ নিয়ে ব্যাবস্থা নিচ্ছি।