Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ মঙ্গলবার, আগষ্ট ২০২৫ | ১১ ভাদ্র ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ওয়াহেদ ম্যানসনের বেজমেন্টে মিললো বিপুল পরিমাণ কেমিক্যাল

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৩:৩৯ PM
আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৭:৫১ PM

bdmorning Image Preview


রাজধানীর চকবাজার এলাকার নন্দকুমার দত্ত সড়কের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আলোচিত ওয়াহেদ ম্যানসনের বেজমেন্টে (মাটির নিচের কক্ষে) বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক মজুদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এখানে আগুন ছড়ালে পরিস্থিতি ভয়াবহতা ও নির্মমতা মাত্রা হতো কল্পনাতীত বলে জানিয়েছেন তারা।

এদিকে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, ওয়াহিদ ম্যানশনে কোনো কেমিক্যালের গোডাউন ছিল না। কিন্তু শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ওয়াহিদ ম্যানশনের বেজমেন্টে গিয়ে দেখা মেলে শত শত ড্রাম, বিভিন্ন কন্টেইনার ও প্যাকেটে নানা ধরনের কেমিক্যাল। রং তৈরিতে ব্যবহৃত হতো এসব কেমিক্যাল, পাউডার এবং লিকুইড। কেমিক্যালে ভরপুর পুরো বেসমেন্ট।

বুধবার চুড়িহাট্টায় গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আশেপাশের কয়েকটি গাড়ি এবং খাবার হোটেলে গ্যাস সিলিন্ডারেরও বিস্ফোরণ ঘটে। পরে আগুন ছড়ায় ওয়াহেদ ম্যানসনে। আর সেখানে বিপুল দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয় ফায়ার সার্ভিসকে।

সরকারি হিসেবে ৬৭ জনের প্রাণহানির একটি বড় অংশই রাস্তা এবং খাবার হোটেলে হয়েছে। বাকিটা হয়েছে ওয়াহেদ ম্যানসনে। সেখানকার তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় আবাসিক ব্যবস্থা ছিল। আর নিচতলা ও দোতলায় বিভিন্ন পণ্য মজুদ ছিল।

শুক্রবার সকালে ফায়ার সার্ভিসের রতন নামে এক কর্মী বেজমেন্টটি খুঁজে পান। সেখানে কেউ মৃত আছেন কি না, তা জানতে তালা খুলে ভেতরে ঢুকতে গিয়েই পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণ রাসায়নিকের মজুদ।

ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, এই বেজমেন্টে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক রয়েছে, যেগুলোর অধিকাংশই ডাইয়িং এবং প্রিন্টিং-এর কাজে ব্যবহৃত হতো।

সব কেমিক্যালই বিপদজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাভাবিক নিয়মে বেজমেন্টে কার পার্কিং থাকার কথা, সেখানে গোডাউন করা হয়েছে, এমনকি গোডাউনে মালপত্র রাখার যেসব নিয়ম কানুন রয়েছে সেগুলোও মানা হয়নি। পুরোই নিয়ম বহির্ভূতভাবে বেজমেন্টে গোডাউনে রাসায়নিক রাখা হয়েছে। আর সেখানে ঢোকার একটিই রাস্তা আছে। সেখানে কাজ করে না মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক। ভেতর থেকে চিৎকার করলেও বাইরে থেকে শোনা যাওয়ার সুযোগও নেই।

দমকল কর্মী রতন সাংবাদিকদের বলেন, এখানে আগুন ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আকার ধারণ করত। আমাদের কষ্ট আরো ব্যাপক হতো। এখানে আগুন লাগলে থামানোর কোনো পথ ছিল না। এগুলো পুড়ে পুড়ে নিজে নিজে আগুন থামত।

কিছু বস্তার গায়ে লেখা আছে ‘ইঞ্জিনিয়ারিং কার্বন’। কিছু ড্রামের গায়ে নারায়ণগঞ্জের মেমার্স সফি টেক্সটাইলের নাম লেখা। এগুলো চীন থেকে আমদানি করা হয়েছে।

বেশ কিছু প্লাস্টিকের ড্রাম এবং বেশ কিছু টিনের ড্রাম রয়েছে। আর কিছু ড্রাম ও বস্তায় আয়রক অক্সাইড, এসিড গ্রিন, আয়রন অক্সাইড রেড প্রভৃতি নাম লেখা আছে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মী রতন আরো বলেন, এই গুদামের বিষয়ে তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। তারা এসেই এসবের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলিতে আগুনের পর পুরান ঢাকা থেকে সব ধরনের রাসায়নিকের গুদাম সরিয়ে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটা হয়নি। চকবাজার আগুনের পরও আবার সরকারের পক্ষ থেকে একই ধরনের প্রতিশ্রুতি এসেছে। জানানো হয়েছে, কেরানীগঞ্জে রাসায়নিক পল্লী গড়ে তোলার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

Bootstrap Image Preview