চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর একের পর এক লাশ আসতে থাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে। কিন্তু ঢামেক মর্গের পাঁচটি ফ্রিজের তিনটিই দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট রয়েছে। যে দুটি ভালো আছে তার একটি আবার জঙ্গিদের লাশ রাখার জন্য। ফলে ঢামেক মর্গের একটি ফ্রিজে ৪টি লাশ রাখার সুযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া মর্গের ৪টি এসিও দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট রয়েছে। মর্গের ভেতরে পর্যাপ্ত স্থান না থাকায় বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা ঘটলেই লাশ রাখাতে হিমশিম খেতে হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
গত বুধবার রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায়ও নিহতদের লাশ রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ঢামেক কর্তৃপক্ষকে। এ ঘটনায় নিহত ৬৭ জনের লাশ গাদাগাদি করে রাখতে হয়েছে মর্গে। এর মধ্যে ৫৮ জন পুরুষ ৫ জন নারী ও ৪ জন শিশু রয়েছে। ৩০ জনের পরিচয় তাৎক্ষণিক শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের লাশ সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ফ্রিজও নাই ঢামেক কর্তৃপক্ষের কাছে।
গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সরেজমিনে দেখা গেছে ঢামেক মর্গের ভেতরে ফ্লোরে সারিবদ্ধ লাশ রাখা। লাশের গায়ে লাগানো দুটো করে নম্বর। দুপুরের পর ওই নম্বর দেখে স্বজনদের কাছে ২২টি লাশ হস্তান্তর করা হয়। তার আগে ময়নাতদন্ত করা হয় লাশের।
এ বিষয়ে ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘মর্গের ৫টি ফ্রিজের মধ্যে ৩টি গত পাঁচ ছয় মাস ধরে নষ্ট রয়েছে। যে দুটি ভালো আছে তার একটি আবার জঙ্গিদের লাশ রাখার জন্য। বাকিটিতে মাত্র চারটি লাশ রাখা যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে সকল লাশ শনাক্ত করতে ডিএনএ টেস্টের প্রয়োজন হবে সেগুলো সংরক্ষণে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ও অন্যান্য হাসপাতালের সহায়তা লাগতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ফ্রিজ ঠিক করার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার বললেও কোন লাভ হয়নি।’
ঢামেক মর্গের ইনচার্জ সেকেন্দার আলী বলেন, ‘মর্গে কাজের সুষ্ঠু কোনো পরিবেশ নেই। তাছাড়া আমাদের ক্যাপাসিটি না থাকায় অন্যান্য হাসপাতালে লাশ পাঠাতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফ্রিজ না থাকায় কিছু লাশ বরফ দিয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় সংরক্ষণ করা হবে। তবে এভাবে বেশি দিন রাখা যাবে না। চারটি এসিও নষ্ট রয়েছে’।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে নিমতলি ট্র্যাজেডির সময় আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল ঢামেকে। তখন স্থান সংকুলান না হওয়ায় লাশ মর্গের সামনের মাঠে রাখা হয়েছিল।