জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে র্যাগিংমুক্ত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে র্যাগিংবিরোধী সচেতনতামূলক র্যালি ও সভা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের (৪৮তম আবর্তন) প্রবেশিকা ক্লাস উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন র্যাগিংবিরোধী দুই দিনব্যাপী বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
রবিবার (প্রথম দিন) সকাল সাড়ে এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রধান অতিথি হিসেবে র্যালির উদ্বোধন করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, এম.পি।
এরপর উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারাজানা ইসলামের নেতৃত্বে র্যালিটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়।
‘ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে র্যাগিংয়ের প্রশ্রয় নেই’ জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. এনামুর রহমান বলেন, প্রত্যেক ধর্মেই বড়দেরকে সম্মান করা, সমবয়সীদের সাথে সৎ ব্যবহার করা এবং ছোটদেরকে স্নেহ করার কথা বলা আছে। ধর্মীয় বিধান মতে আমরা সিনিয়র যারা আছি তারা নতুনদেরকে নিজেদের ভাই-বোনের মতো করে দেখবো এবং যত্ন নেবো। যাতে তারা নতুন পরিবশে এসে চিন্তামুক্ত থেকে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে পারে।
‘র্যাগিং বন্ধে সবার আগে বিবেককে জাগ্রত করতে হবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভয়- ভীতি বা শাসন দিয়ে কোন কিছু প্রতিষ্ঠিত হয় না। এটা মানসিক ব্যাপার, নির্মাণের ব্যাপার। আমরা আমাদের বিবেককে জাগ্রত করবো, বিবেকহীনের মতো কোন আচরণ করবো না। যারা নতুন আসছে তারা ভবিষ্যতের প্রজন্ম। তাদেরকে গড়ে তোলার দায়িত্বও আমাদের।’
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য ড. ফারাজানা ইসলাম বলেন, ‘সমস্ত বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে সচেতনতাবোধ তৈরি হয়েছে। এই সচেতনা বৃদ্ধির জন্যই আমরা একত্রিত হয়েছি। অত্যাচারের মধ্য দিয়ে নয়, ভালোবাসা ও স্নেহের মধ্য দিয়ে সত্যিকারের সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে।’
নতুন শিক্ষার্থীরা কোন পীড়নের শিকার হলে তারা যেন বিভাগ, অনুষদ এবং প্রশাসনকে জানায় সে অনুরোধ ব্যক্ত করেন।
র্যালি শেষে সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়েল উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আলম, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. আমির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, ছাত্র-কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অমর একুশ’ ভাস্কর্যের সামনে থেকে বেলা এগারোটায় র্যাগিং বিরোধী র্যালি শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদার্পণ করে পুরাতন কলাভবনে গিয়ে শেষ হবে।