বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী নিহত পলাশ আহমেদের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় দুধঘাটা। বাবার নাম পিয়ার জাহান।
সোমবার সকালে সরেজমিন পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামে মাহমুদ পলাশের বাড়ি গিয়ে দেখা যায় তাদের বাড়িতে ১১টি ঘর। পলাশদের পাকা বিল্ডিং। ছেলের মৃত্যুর শোকে মা রীনা বেগম আহাজারি করছেন। ছেলের শোকে কাতর বাবাও। আশপাশের শত শত মানুষ জড়ো হয়েছে বাড়িতে। বাড়ির উঠানেই কথা হয় বাবা ফিয়ার জাহানের সঙ্গে। তিনি বলেন, পলাশ তার একমাত্র ছেলে। তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। বাড়িতে জান্নাত নামে চার বছরের এক মেয়ে আছে।
পিয়ার জাহান বলেন, ১৯৯০ সালে কাজের উদ্দেশে তিনি ইরাক চলে যান। সেখানে চার বছর থাকার পর দেশে ফিরে আসেন। পরে তিনি আবার সৌদি আরব চলে যান। ২০১২ সালে তিনি আবার দেশে ফেরেন। এর মধ্যে ছেলে পলাশ মাহমুদ তাহেরপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে ২০১২ সালে দাখিল পরীক্ষা দিয়ে পাস করে। দাখিল পাস করে সে সোনাগাঁও ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়। সেখানে পড়া অবস্থায় সে ঢাকায় চলে যায়। তারপর থেকে তার আচরণে পরিবর্তন দেখা দেয়।
তিনি জানান, এক পর্যায়ে জানা যায়, পলাশ নাকি ঢাকায় চলচ্চিত্রে কাজ করার চেষ্টা করছে। তখন বাড়ির সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল না। মাঝে মাঝে বাড়িতে এলেও এলাকার মানুষের সঙ্গে মিশত না, কথা বলত না।
পিয়ার জাহান বলেন, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারির দিকে শিমলা নামে এক মেয়েকে রাতের বেলা বাড়িতে নিয়ে আসে পলাশ। মেয়েটিকে চিত্রনায়িকা ও তার প্রেমিকা বলে আমাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। দুই মাস পর আবার শিমলাকে বাড়িতে নিয়ে এসে বিবাহিত স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেয়। বিয়ের কথা শিমলাও আমাদের কাছে স্বীকার করে। ওই রাতেই তারা আবার ঢাকায় চলে যায়। আমরা শিমলাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি, তাকে বলেছি, আমার ছেলেকে যেন ভালো পথে ফিরিয়ে আনে। ছোটবেলা থেকেই ছেলেটি অবাধ্য ছিল। পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে প্রবাস থেকে আমার পাঠানো টাকা সে নানা পথে খরচ করেছে।
তিনি আরো জানান, সর্বশেষ ২০-২৫ দিন আগে পলাশ বাড়িতে আসে। বাড়িতে আসার পর তার আচরণে বিরাট পরিবর্তন দেখা দেয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া শুরু করে, মসজিদে গিয়ে আজানও দিয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবার বাড়ি থেকে যাওয়া আগে বলেছে, সে কাজের সন্ধানে দুবাই যাবে।
রবিবার চট্টগ্রামে বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় পলাশের মৃত্যুর খবর ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারেন বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁও থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় নিহতের ছবি তাদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর পরিবার তা শনাক্ত করে।