পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে জইশ-ই-মোহম্মদের জঙ্গি ঘাঁটি উড়িয়ে দিতে শুধুমাত্র ১.৭ কোটি টাকার বোমা ব্যবহার করেছে ভারত।
ভারতীয় বিমান বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে মোট ৬টি ১০০০ কেজির বোমা বর্ষণ করা হয়েছে মিরাজ ২০০০ থেকে।
অন্ধকারে অব্যর্থ লক্ষ্যভেদের জন্য লেজার গাইডেড ১০০০ কেজির এক একটা বোমার দামই ৫৬ লাখ টাকা। বালাকোট, মুজফফরাবাদ, চোকটি তিনটি জায়গায় ২১ মিনিট ধরে চলেছে গোলা বর্ষণ। প্রায় ৩০০ জঙ্গি নিহত হয়েছে। আর এই অভিযান সফল করতে ৬,৩০০ কোটি টাকার সম্পদ ব্যবহার করেছে ভারতীয় বিমান বাহিনী।
তারমধ্যে ৩,৬৮৬ কোটি টাকার সম্পদ সংরক্ষিত রাখা হয়েছিল বিকল্প হিসেবে। কোনো বিমান ব্যর্থ হলে অথবা পাল্টা হামলা হলে এই সম্পদ ব্যবহার করা হতো। বালাকোটে অভিযান চলাকালীন পাকিস্তানি আকাশসীমায় নজরদারি চালানোর জন্য এয়ারবোন ওয়ার্নিং এবং কন্ট্রোলিং সিস্টেম মোতায়েন করা হয়েছিল। অভিযান চলাকালীন একটি বিমান শুধু এই যন্ত্রের মাধ্যমে পাকিস্তানের আকাশ সীমায় নজরদারি চালিয়েছে। যার দাম প্রায় ১,৭৫০ কোটি টাকা।
অভিযান চলাকালীন কোনো বিমানের জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে আকাশপথেই যাতে জ্বালানি ভরা যায় তার জন্য বিশেষ বিমান তৈরি ছিল। সেই রিফিলিং ট্যাঙ্কারের দাম প্রায় ২২ কোটি টাকা। এছাড়াও ৮০ কোটি টাকা মূল্যের ড্রোন আকাশে নজরদারি চালিয়েছে।
এছাড়াও আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে মজুত রাখা হয়েছিল তিনটি রাশিয়ার তৈরি সুখোই-সু-৩০ এমকেআই। যার এক একটির দাম ৩৫৮ কোটি টাকা। একই সঙ্গে রাখা ছিল পাঁচটি মিগ-২৯এস যুদ্ধ বিমান। এই বিমানের এক একটির দাম ১৫৪ কোটি টাকা। যে ১২টি মিরাজ ২০০০ বিমানে হামলা চালানো হয়েছে, তার এক একটির দাম ২১৪ কোটি টাকা।
এদিকে ভারতের হামলার ২৪ ঘণ্টা পর দেশটির আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান। ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত এবং নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিমানের হানা এবং পাল্টা হানার লড়াইয়ের ফাঁকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে জম্মু ও কাশ্মীর এবং পাঞ্জাবের সমস্ত বিমানবন্দর পুরোপুরি বন্ধ করে দিল ভারত। পাশাপাশি ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হেডকোয়ার্টারে চলছে চরম ব্যস্ততা। সেখানেই একের পর এক বৈঠক করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।
সকালেই ভারত জানতে পারে, আকাশসীমা লঙ্ঘন করে পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান ঢুকে পড়ছে। একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েও দেয় ভারত। এই খবর পাওয়া মাত্র বিজ্ঞান ভবনে একটি অনুষ্ঠান চলাকালীনই বেরিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর কাছে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে একটি চিরকুট আসা মাত্রই হাত নেড়ে বেরিয়ে যান মোদি। এরপরই নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ডাক দেন একটি জরুরি বৈঠকের।
বিজ্ঞান ভবনের অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন রাঠোরও। এরআগে নিজের বাড়িতেও একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখেল, বিমানবাহিনীর প্রধানসহ দেশের অন্যান্য বাহিনীর প্রধানরাও।