ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশ সম্প্রসারিত ১৮টি করে মোট ৩৬টি ওয়ার্ডে ভোট গ্রহণ চলছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা শুরু হওয়া এই ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। নির্বাচন উপলক্ষে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এদিকে সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপক্ষো করেই কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছেন ভোটাররা। তবে সকালে প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল কম, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতির সংখ্যা বাড়বে বলে জানা যায়।
এ ছাড়া এ দুই সিটির সম্প্রসারিত ৩৬টি ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ১২টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কারা হচ্ছেন সেটিও নির্ধারিত হবে আজকের ভোটে। এ উপলক্ষে ঢাকার দুই সিটি ও নির্বাচনী এলাকাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে ঢাকার দুই সিটির প্রধান সড়কে যান চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ ও আগের সিটি কর্পোরেশনগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হলেও এ নির্বাচনে তা ব্যবহার করছে না ইসি।
এদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করে এনেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার ভোট কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনী মালামাল পাঠানো হয়েছে। তবে আগের রাতে সিল মারার শঙ্কায় ঢাকার দুই সিটির ৩৬টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদের ব্যালট পেপার আগে পাঠানো হয়নি।
তবে মেয়র পদের ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রগুলোতে কাউন্সিলর পদের ব্যালট পেপার পাঠানো হয় বলে জানিয়েছে ইসি।
নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব পর্যবেক্ষকরাও মাঠে আছে।
ভোটারদের নিরাপত্তায় বিজিবি, পুলিশ ও র্যাবের টিম টহলে আছে। এ ছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুতে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ পদে আওয়ামী লীগসহ চারটি রাজনৈতিক দলের চারজন ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তবে এ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির সঙ্গে ১৮টি করে নতুন ওয়ার্ড যুক্ত হওয়ায় সেগুলোতেও ভোট গ্রহণ হচ্ছে। নবনির্বাচিতদের মেয়াদ হবে এক বছরের কিছু বেশি সময়। সব দল অংশগ্রহণ না করা এবং মেয়াদ কম থাকায় এ নির্বাচনের প্রচার ছিল অনেকটাই নিরুত্তাপ।
ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে মোট প্রার্থী ৩৮২ জন। এরমধ্যে মেয়র পদে ৪ জন। দুই সিটিতে ৩৬টি সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৩১০ জন। উত্তর দক্ষিণ সিটিতে ৬টি করে ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থীর সংখ্যা ৬৯ জন। এরমধ্যে ডিএনসিসির ১৮টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১১৬ জন, সমসংখ্যাক ওয়ার্ডে ডিএসসিসিতে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ১২৫জন।
অন্যদিকে, ডিএনসিসি‘র ৬ সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৪৫ জন এবং ডিএসসিসিতে ২৪ জন। মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলেও কাউন্সিলর পদে দলীয় স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে। ইতোমধ্যে ঢাকা উত্তরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে একজন প্রার্থী বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
মেয়র প্রার্থী যারা
ডিএনসিসি উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা হলেন, ‘নৌকা’ প্রতীকে আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলাম; ‘লাঙ্গল’ প্রতীকে জাতীয় পার্টি থেকে শাফিন আহমেদ, ‘বাঘ’ প্রতীক নিয়ে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি) থেকে শাহিন খান, ‘আম’ প্রতীক নিয়ে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনিসুর রহমান দেওয়ান এবং ‘টেবিল ঘড়ি’ নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী নর্থ সাউথ প্রপার্টিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহিম নির্বাচন করছেন।