আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল সংসদের জন্য বিধি বহির্ভূতভাবে দুইজনের প্রার্থীতা চূড়ান্ত করার অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রত্ব না থাকা সত্ত্বেও তাদের প্রার্থীতা বহাল রাখায় সর্বত্র চলছে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী, তফসিল ঘোষণার আগে (১১ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণা হয়) যদি কোন ছাত্রের ফলাফল প্রকাশ হয় তাহলে তিনি ডাকসু বা হল সংসদে নির্বাচন করতে পারবেন না। কিন্তু জহুরুল হক হল সংসদে ছাত্রলীগের প্যানেলে ভিপি (সহ-সভাপতি) প্রার্থী সাইফুল্লাহ আব্বাসী ও এজিএস (সহ-সাধারন সম্পাদক) প্রার্থী সুরপ মিয়ার ক্ষেত্রে এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে।
সূত্র থেকে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পাস করেছেন সাইফুল্লাহ আব্বাসী ও সুরপ মিয়া। সাইফুল্লাহ ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের আর সুরপ মিয়া ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। এর মধ্যে সাইফুল্লাহ এক বছর শিক্ষা বিরতি দিয়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন। গত ২৮ জানুয়ারি তাদের মাস্টার্সের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, মাস্টার্সে সাইফুল্লাহ আব্বাসী ৩ দশমিক ১৬ এবং সুরপ মিয়া ৩ দশমিক ১৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোনো শিক্ষার্থীর মাস্টার্সের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে তাদের ছাত্রত্ব শেষ হয়ে যায়। একই সাথে তার জন্য হলে বরাদ্দকৃত সিটটিও বাতিল হয়ে অন্য শিক্ষার্থীর নামে বরাদ্দ হয়ে যায়। গত ২০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় সাইফুল্লাহ আব্বাসী ও সুরপ মিয়ার নাম ছিল।
এছাড়া, ২৭ ফেব্রুয়ারি ডাকসু নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানেও প্রার্থী হিসেবে এই দুই জনের নাম দেখা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাইফুল্লাহ আব্বাসী জানান, আমার নাম চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় আছে। সেজন্যই আমি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। এটাকে প্রশাসনের ভুল মনে করছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।
এ বিষয়ে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, যার নাম চূড়ান্ত তালিকায় আছে সে প্রার্থী হতে পারবে। ছাত্রত্ব না থাকলে সে কি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, যার হল কার্ডের মেয়াদ আছে, সে ভোটার ও প্রার্থী হতে পারবে। তবে, এর আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বিষয়টি আমাদের অবহিত ছিল না। কোনো প্রার্থী লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে ডাকসুর গঠনতন্ত্র যুগোপযোগী ও সংশোধন কমিটির প্রধান অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ১১ ফেব্রুয়ারি ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছিল। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিন যাদের ছাত্রত্ব ছিল, তারা ডাকসু ও হল সংসদে ভোটার ও প্রার্থী হতে পারবে। তবে, কারো যদি ১০ ফেব্রুয়ারিও ফল প্রকাশ হয় সে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না।
তবে, এ বিষয়ে ডাকসুর প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. এস এম মাহফুজুর রহমান বলছেন ভিন্ন কথা বলেন। তিনি বলেন, অভিযোগ জানানোর জন্য সময় দেয়া হয়েছে। তখন কেন কেউ এ বিষয়ে অভিযোগ করেনি। এখন আর আমার কিছু করার নেই।