Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শনিবার, মে ২০২৫ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

চট্টগ্রামে শেষ হলো একুশের অভিন্ন বইমেলা

বশির আলমামুন, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি 
প্রকাশিত: ০৩ মার্চ ২০১৯, ১১:২৫ AM
আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৯, ১১:২৫ AM

bdmorning Image Preview


চট্টগ্রামের একুশের অভিন্ন বইমেলার পর্দা নেমেছে গতকাল শনিবার। ফেব্রুয়ারি মাসের পর মার্চের প্রথম দুদিন চলেছে বইমেলা। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত প্রকাশকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অতীতের প্রথা ভেঙে বাড়ানো হয় দুদিন সময়। সরকারি ছুটির দিন শুক্র-শনিবার এ দুদিনে ক্ষতির কিছুটা পুষিয়ে নিতে পেরেছেন প্রকাশকরা।

বইমেলায় বিদায়ের সুর ছিল গতকাল সকাল থেকেই। বইপ্রেমী, প্রকাশক ও লেখকরা মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বিদায়ের। সরেজমিন দেখা যায়, বইমেলায় বৃষ্টির রেশ রয়ে গেছে এখনো। কোথাও কোথাও জমে থাকা পানি ও কাদা পেরিয়ে হাঁটতে হয়েছে সতর্কতার সঙ্গে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সহায়তায় ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে এ বইমেলার আয়োজন করে। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ১১০টি প্রকাশকের স্টল ছিলো। প্রতিদিনই মেলায় বই প্রেমি ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় ছিল।

২৫ ফেব্রুয়ারি একদিন বৃষ্টির কারণে বইমেলার একটু ব্যাঘাত ঘটলেও পরেরদিন থেকে যথারীতি ভিড় জমে মেলার বিভিন্ন বইয়ের স্টলে। বিক্রিও হয় প্রচুর বই।

আয়োজক কমিটি জানিয়েছে, ২০ দিনে প্রায় ১৪ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে। বই শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেক স্টল আগে থেকেই বন্ধ হয়ে গেছে। বইমেলায় প্রতিদিন ছিল আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বইমেলার বিভিন্ন স্টলে ঘুরে জানা গেছে, এবারে সবচেয়ে বেশি বই বিক্রি হয়েছে পেন্সিল প্রকাশনীর বই। তাদের ২০ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। ঢাকার মতো আয়োজন হওয়ায় তারা সিটি করপোরেশনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

ওই প্রকাশনীর কর্মকর্তা ও লেখক সায়েম হোসেন চৌধুরী বলেন, একবারে ঢাকার বইমেলার মতোই মনে হয়েছে আমার। প্রতিদিন পাঠকদের উপস্থিতি ছিলো প্রচুর। তিনি বলেন, তরুণ লেখকদের বই পাঠকরা বেশি কিনেছেন। ব্যবসাও ভালো হয়েছে। বইমেলায় তরুণ লেখকদের বইয়ের প্রতি পাঠকের আগ্রহ দেখে ভালো লেগেছে। আগামীতেও যাতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এ ধরনের সুন্দর একটা আয়োজন করে সেই দাবিই থাকল।

বইমেলায় বইপ্রেমীদের ভিড় ছিলো প্রায় প্রতিদিনই অক্ষরবৃত্ত প্রকাশনীতে ৬ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। অক্ষরবৃত্তের প্রকাশক আনিস সুজন বলেন, প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তি বেশি ছিল। চট্টগ্রামে এ প্রথম এবারেই সবচেয়ে বেশি বই বিক্রি হয়েছে।

এছাড়া প্রথমা প্রকাশনীতে ৯ লাখ টাকা ও বলাকা প্রকাশনীতে প্রায় তিন লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। এরকম ১১০টি স্টলে বিভিন্ন প্রকাশকের প্রচুর বই বিক্রি হয়েছে বলে প্রকাশকরা জানিয়েছেন।

প্রথম প্রকাশনীর ইব্রাহিম তানভির বলেন, আমার কোনোভাবেই মনে হয়নি চট্টগ্রামের বইমেলা এটি। প্রতিদিন পাঠকের ভীড়ে বই বিক্রি করতে হিমশিম খেতে হয়েছে।

মেলায় স্টল নিয়ে আসা গার্ডিয়ান প্রকাশনির আবদুল্লাহ রাসেল বলেন এবারে তাদের ৭ থেকে ৮ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরেদোয়ানের জীবনী নিয়ে লেখা বই দ্যা চেঞ্জ মেকার অব এরেদোয়ান বইটি ভাল বিক্রি হয়েছে।
বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে মেলায় এসেছেন সদ্য শেষ হওয়া এসএসসি পরিক্ষার্থী সুবহা বিনতে মামুন। তিনি বলেন, ‘এই প্রথম আসা হয়েছে বই মেলায়। চট্টগ্রামের এবারের বইমেলাকে অন্যরকম মনে হয়েছে।

একুশে বইমেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু বলেন, ২০ দিনে প্রায় ১৪  কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে। এত বই বিক্রি হবে সেটা আমরা চিন্তাও করিনি। আগামীতেও এ ধরণের বইমেলার আয়োজন করা হবে। চট্টগ্রামের বই মেলার আয়োজন এক নতুন দিগন্তের সূচনা করলো। আগামী বছর আরও সুন্দর ও দর্শক উপযোগী করে আয়োজনের অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে শেষ হল ২০দিনের এ বইমেলার।

Bootstrap Image Preview