Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ৩০ বুধবার, এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

প্রবীণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সেবাদানকারীদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ

অরুপ সরকার
প্রকাশিত: ০৩ মার্চ ২০১৯, ০৯:২৪ PM
আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৯, ০৯:২৪ PM

bdmorning Image Preview


চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন, স্বাস্থ্যসচেতনতা, দ্রুত রোগ নির্ণয় ও কার্যকর চিকিৎসা, পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নতি, নিরাপদ পানীয় জলের সংস্থান, নানা রকমের রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার সফল প্রয়োগ ইত্যাদি কারণে মানুষ আজ বেশিদিন বেঁচে থাকতে সক্ষম।

অনেক জটিল রোগ যা একসময় মৃত্যুর নামান্তর ছিল, আজ তা অনেকাংশে নিরাময়যোগ্য। এখন স্ট্রোক কিংবা হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিও বেঁচে যাচ্ছেন, কিডনি বা লিভারের রোগে আক্রান্ত মৃতপ্রায় ব্যক্তি অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে নতুন জীবন লাভ করছেন। এসব সাফল্য আমাদের গড় আয়ু বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রবীণের সংখ্যাও বাড়ছে, আর সেই সঙ্গে বয়স বৃদ্ধিজনিত রোগসমূহের প্রকোপও বেড়ে যাচ্ছে।

আজ ৩ মার্চ ২০১৯ সকাল ৯ টায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সূচনা ভবনের হলরুমে দুই দিনব্যাপী কর্মশালা উদ্বোধন হয়। উক্ত কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সমন্বয়ক ডাঃ মনজুর কাদির আহমেদ, ডঃ এম এ কাশেম শেখ, ডাঃ রেজাউল হক। এছাড়াও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ১০ টি প্রকল্পের ব্যবস্থাপকগণ ও একজন করে প্রবীণ ক্লাবের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সমন্বয়ক তার বক্তব্যে বলেন, গ্রামে যে বয়স্ক মানুষ আছে তার সেবার জন্য লোক দরকার কারণ তার সন্তান গ্রাম থেকে উপজেলায় অথবা যে উপজেলায় থাকে সে জেলাশহরে থাকবে তার সন্তানকে একটা ভালো স্কুলে দেওয়ার জন্য। কিন্তু যে প্রবীণ তাকে দেখাশোনার তো কেউ থাকবে না,গ্রামে যে স্বাস্থ্যকর্মী আছে তাকেই এই দায়িত্ব নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে সেবিকা নিয়োগ হবে কমিউনিটি নার্স, বাড়িতে বসে বয়স্কদের সেবা দেওয়ার জন্য।বাংলাদেশে বৃদ্ধবয়সে সেবা দেয়ার জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেবাদানকারীও নেই। যেটা ভবিষ্যতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে।

উল্লেখ্য গত ফেব্রুয়ারি,২০১৮ থেকে গণস্বাস্থ্যের ১০টি প্রকল্পে প্রবীণদের সুস্বাস্থ্য, দারিদ্রমুক্ত,কর্মময় ও নিরাপদ সামাজিক জীবন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রবীণ ক্লাব গঠিত হয়েছে, এ বছর নতুন একটি ক্লাব সংযুক্ত করা হয়েছে।

"বয়স্ক মানুষদের নিয়ে একটি প্রতিষ্ঠানে তিনটা কাজ হতে পারে- চিকিৎসা বা সেবাদান, সেবাদানকারীদের প্রশিক্ষণ এবং অ্যাকাডেমিক- অর্থাৎ এই পরিস্থিতিতে কী করা যায় এ নিয়ে গবেষণা"।

বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ প্রবীণ বা সিনিয়র সিটিজেন রয়েছে। এই হারে বাংলাদেশে ২০৩০ সালের আগেই প্রবীণ জনগোষ্ঠির সংখ্যা দুই কোটি ছাড়িয়ে যাবে। ষাট বছরের বেশী বয়সী মানুষকে বাংলাদেশে প্রবীণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ হিসেবে, বাংলাদেশে বতর্মানে মানুষের গড় আয়ু ৭১ বছর ছয় মাস।

বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়, সাথে মাংসপেশিও। রুচি আর ঘুম কমে যায়, হাঁড়ের হয় ক্ষয়, লিভার ও কিডনির কার্যক্ষমতা কমতে থাকে। শারীরিক পরিবর্তনের কারণে কিছু কিছু রোগ প্রকৃতিগতভাবে বয়স্কদেরই হয়ে থাকে। যেমন তাদের রক্তনালী সরু হয়ে যায়। ফলে উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ইত্যাদি হতে পারে।প্রবীণদের সবচেয়ে বেশি যেই জিনিসটি দরকার সেটি হলো যত্ন।

যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনির সমস্যা রয়েছে তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত খাবার খেতে হবে এবং একই সাথে প্রয়োজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা।

এই কর্মশালার সার্বিক দায়িত্বে আছেন ডাঃ কামরুন্নাহার অনু (পিটি), ফিজিওথেরাপিস্ট, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং মোঃ শহীদুল ইসলাম, সিনিয়র মনিটরিং অফিসার, গবেষণা বিভাগ।

Bootstrap Image Preview