নানা আয়োজনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দুই দিনব্যাপী আনর্ত নাট্যমেলা শুরু হয়েছে। মেলা উপলক্ষে শোভাযাত্রা, নাট্য মঞ্চায়ন, মূকাভিনয়সহ নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
সোমবার (৪ মার্চ) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে আনর্তমঞ্চে মেলার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি রহমান রাজুর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। এ ছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, নাট্যকার মলয় ভৌমিক, বিপ্লব বালা, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দেবলীনা ত্রিপাঠী ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লিয়াকত আলী লাকী বলেন, আমরা সংস্কৃতিকে এমন অবস্থায় নিয়ে যেতে চাই যেখানে সংস্কৃতি দেশকে শাসন করবে। আমরা এমন সাংস্কৃতিক জাগরণের জন্য আন্দোলন করছি। কেননা কেবল শিল্পই পারে হিংসা থেকে উত্তোরণ ঘটাতে। তিনি বলেন, নাট্যচর্চায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আলোকিত অঞ্চলে পরিণত হয়েছে।
প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বলেন, বায়ান্নোর একুশে ফেব্রুয়ারি, ১৯৭১ হয়েছিল বলে আজ আমরা এ অবস্থানে আসতে পেরেছি। অন্যথায় আমরা এমন পরিবেশ পেতাম না।
নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ বলেন, নাটকের মাধ্যমে লোকশিক্ষা হয়। কিন্তু এটা শাসকগোষ্ঠীকে বুঝানো যায় না। ফলে নাটক রাষ্ট্রীয়ভাবেসহ নানাভাবে নিগৃহীত হয়। আমরা চাই রাষ্ট্র আরও মানবিক হোক।
উদ্বোধন শেষে শিল্পযাত্রা শিরোনামে শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মেলাপ্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে ‘থিয়েটারের নেপথ্য ও প্রত্যক্ষ মানুষ: উপেক্ষায় সম্ভাবনার সূত্র’ শীর্ষক আনর্তবৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে তিনটি নাট্যকথা অনুষ্ঠিত হয়। পরে আয়োজন অন্যরকম গানের আসর ‘নটনটীর ভূমিগীতি’। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে নাট্যকার মলয় ভৌমিকের নির্দেশনায় নাটক ‘বুদেরামের কূপে পড়া’ মঞ্চায়নের মাধ্যমে প্রথম দিনের আয়োজন শেষ হবে।
মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকাল নাট্যচক্র, অ্যাসোসিয়েশন ফর কালচার অ্যান্ড এডুকেশন (এস), আবৃত্তি সংগঠন স্বনন, অনুশীলন নাট্যদল, মুকাভিনয়, তীর্থক নাটক, বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার রাজশাহী, উদীচী, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ড্রামা অ্যাসোসিয়েশন (রুডা) সংগঠনের স্টল রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের সংগঠনগুলোর মধ্যে রাজশাহী থিয়েটার, রাজশাহীর হেরিটেজ আর্কাইভস, বগুড়া থিয়েটার, নাটোরের ভোর হলো ও ইঙ্গিত থিয়েটার, সান্তাহারের চৌপাশ থিয়েটার ও পাবনার ড্রামা সার্কেল। এ ছাড়া, তথ্য সরবরাহের জন্য মেলায় রয়েছে ‘সূত্রসন্ধান ও টিকেট’ স্টল। রয়েছে ‘বইয়ের হাট’। নাট্যমেলায় আসা দর্শনার্থীরা এখানের নাট্য সংশ্লিষ্ট নানা রকমের বই, ম্যাগাজিন, ছোট পত্রিকা কিনতে কিংবা পড়তে পারবেন।