Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৪ বুধবার, মে ২০২৫ | ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

অখুশি প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা, যাচ্ছেন বৃহত্তর আন্দোলনে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ মার্চ ২০১৯, ০৫:১৬ PM
আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯, ০৫:১৬ PM

bdmorning Image Preview
ফাইল ছবি


সদ্য অনুমোদিত বিধিমালায় বেতন প্রধান শিক্ষকের পরের ধাপ তথা ১১তম গ্রেড না দেয়ায় বৃহত্তর আন্দোলনে যাচ্ছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহাকারী শিক্ষকরা। আন্দোলনে ব্যাপারে ইতোমধ্যেই প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ জানান, প্রাথমিকভাবে ১৩ মার্চ পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন তারা। এর আগে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ১১ মার্চ সারাদেশে সংবাদ সম্মেলন করা হবে। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ অনুষ্ঠানে (১৩ মার্চ ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসলে ১৪ মার্চ সারাদেশে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হবে। এছাড়াও ওইদিন শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী ও সচিব বরাবর স্মারকলিপি দেবেন তারা। এরপরও দাবি মানা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।

শিক্ষক নেতারা বলছেন, গণমাধ্যমে জানতে পেরেছি প্রধান শিক্ষকদের জন্য দশম গ্রেড এবং সহকারী শিক্ষকদের ১২তম গ্রেড দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। এতে দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্য নিরসন করার জন্য যে আন্দোলন করা হচ্ছে তার সুরাহা হবে না; বরং বৈষম্য আরও বৃদ্ধি পাবে। আগে দুই হাজার ৩০০ টাকার মতো বেতনের পার্থক্য থাকলেও এটি বাস্তবায়ন হলে তা হয়ে যাবে চার হাজার ৭০০ টাকা। সবমিলিয়ে ৭-৮ হাজার টাকার বেতন বৈষম্য হবে।

১০তম ও ১২তম গ্রেডে বেতন দেওয়া হলে তা সহকারী শিক্ষকদের জন্য অসম্মানজনক হবে দাবি করে শিক্ষক নেতা শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, এতে অনেক শিক্ষকের মধ্যে আন্তরিকতার ঘাটতি দেখা দিতে পারে, যা সার্বিকভাবে শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য ক্ষতি ডেকে আনবে। এজন্য আমরা বেতন বৃদ্ধি চাই না বৈষম্যের অবসান চাই।

বেতন বৈষম্য দূর করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর কাছে চার দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষক মহাজোট। দাবিগুলো হচ্ছে- ৯ মার্চ থেকে সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতন পুনঃনির্ধারণ, নিয়োগবিধি পরিবর্তন করে পুরুষ ও মহিলা- উভয়ের ক্ষেত্রেই শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক ডিগ্রী নির্ধারণ, সরাসরি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ করে সহাকারী শিক্ষক থেকে পদোন্নতির ব্যবস্থা এবং সিএনডি/ডিপিএড ও বিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বেতন উন্নীত স্কেলে বেতন নির্ধারণ। প্রাথমিকে মানুষ গড়ার কারিগর তথা সহাকারী শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষায় অবিলম্বে এই দাবিগুলো কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন তারা।

এর আগে বেতন বৈষম্যের প্রতিবাদে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে সহকারী শিক্ষকরা। বিধিমালার প্রতিবাদে ঢাকা, রাজশাহী, বরিশাল, বগুড়া, ঝালকাঠী, নীলফামারী, নড়াইল, পাবনা, পঞ্চগড়, নোয়াখালী, খুলনা, যশোর, ময়মনসিংহ, সিলেট, পটুয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন করেছেন সহকারী শিক্ষকরা। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিক্ষোভ ও অনশনে কর্মসূচির।

শিক্ষক নেতারা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন স্কেলের এই পরিবর্তনে প্রধান শিক্ষকরা খুশি হলেও সহকারী শিক্ষকরা খুশি নন। তারা সহকারী প্রধান শিক্ষকের নতুন পদটি চান না। তারা মনে করছেন, এ পদ সৃষ্টি হলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পেতে সহকারী শিক্ষকদের দুটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে। আর সহকারী প্রধান শিক্ষক পদটি না থাকলে এক ধাপ পদোন্নতি পেলেই প্রধান শিক্ষক হওয়া যাবে। তারা প্রধান শিক্ষকের পরের ধাপেই বেতন চান।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে প্রশিক্ষণবিহীন প্রধান শিক্ষক বেতন পান ১২ তম গ্রেডে (১১৩০০ টাকা বেতন স্কেল) এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১১তম গ্রেডে (১২৫০০ টাকা বেতন স্কেল)। আর প্রশিক্ষণবিহীন সহকারী শিক্ষক ১৫ তম গ্রেডে (৯৭০০ টাকা বেতন স্কেল) এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক ১৪তম গ্রেডে (১০২০০ টাকা বেতন স্কেল) বেতন পান।

Bootstrap Image Preview