জঙ্গি, উগ্রবাদ ও সন্ত্রাস মোকাবেলায় বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সফল হয়েছে, তবে আমরা তৃপ্ত নই। যদি তৃপ্ত হই তবে আমাদের আবার ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হবে বলে জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।
শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর বিএফডিসি’র অডিটোরিয়ামে এ বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জানতে চাওয়াটা মানুষের অধিকার। আমরাও এটা বিশ্বাস করি। তবে পাশাপাশি জানার অধিকার দেখাতে গিয়ে তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার যেন কেউ না করে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের ইসলামিক স্কলারদের এগিয়ে আসতে হবে। ইসলাম ধর্ম যে আধুনিক ও সব যুগের জন্যই পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান তা বোঝাতে হবে এবং ধর্মের নামে যে উগ্রবাদী চিন্তা বা মতবাদ রয়েছে তা বন্ধে কার্যকরী দিকনির্দেশনা দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, সুফি-সাধকদের আগমন ঘটেছে সমাজে যে অন্যায়-অবিচার অসামঞ্জস্য রয়েছে তা দূর করা, সাম্যের সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আমাদের দেশে প্রকৃত শান্তির কথাই প্রচার হয়েছিল। তবে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র থাকা সত্ত্বেও কখনো জঙ্গিবাদ-উগ্রবাদ শিকড় গাড়তে পারেনি। এর পেছনে তিনটি কারণ একটি হচ্ছে, সরকারের পলিসি, দেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধতা ও জঙ্গিবাদ উগ্রবাদবিরোধী অবস্থান এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা।
বেনজীর আহমেদ বলেন, ইন্টারনেটে বিলিয়ন বিলিয়ন তথ্য রয়েছে। মূল ব্যাপার হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিনে আমি কী খুঁজছি। আমি কি উগ্রবাদের ম্যাটারিয়েল খুঁজছি, নাকি উগ্রবাদের বিরুদ্ধে। ইসলামের বিরুদ্ধে যে কথাগুলো বলে ইসলামকে কোনঠাসা করার চেষ্টা চলছে তাও আছে ইন্টারনেটে। আবার ইসলামের সঠিক কথাটাও আছে ইন্টারনেটে। আমরা আসলে কোনটা গ্রহণ করবো, কোনটা গ্রহণ করবো না, আমাদের সেটা আগে ঠিক করতে হবে। বুঝে, যাচাই করে নিতে হবে, কোনটা সঠিক।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার আমাদের কিছু কিছু তরুণকে উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়তে উৎসাহিত করছে। কেবল উগ্র ধর্মীয় উন্মাদনা, আর্থ সামাজিক বৈষম্য, দারিদ্রতা ও সুশাসনের অভাবই সহিংস উগ্রবাদের জন্য দায়ী নয়। এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে নিউজিল্যান্ডে দুটি মসজিদে হামলা।
তিনি আরো বলেন, শুধুমাত্র গ্রেফতার বা শাস্তির মাধ্যমে উগ্রবাদ প্রতিরোধ করা যাবে না। এর জন্য দরকার সচেতনতা। জঙ্গিবাদ-উগ্রবাদ বিরোধী রাজনৈতিক অবস্থান, ধর্মীয় স্কলারদের নির্দেশনা ও লেখনী।
এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত প্রতিযোগিতায় সহযোগিতা করছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সম্প্রীতি প্রকল্প।