সুপ্রভাত বাস চাপায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিহতের প্রতিবাদে রাজধানীর প্রগতি সরণি, শাহবাগ, রায় সাহেব বাজারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২০ মার্চ) সকাল থেকে সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে সায়েন্স ল্যাব ও ফার্মগেট এলাকায় গাড়ি লাইসেন্স পরীক্ষা করছে শিক্ষার্থীরা। এর আগে সকাল থেকেই বসুন্ধরা আবাসিক গেট এলাকায় জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। পরে সাড়ে ৯টার দিকে তারা সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন।
আন্দোলনে অংশ নেয়া বিইউপির শিক্ষার্থী এহাসানুল হক বলেন, ‘আমাদের দাবি আদায়ে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ (বুধবার) আবারও সড়কে অবস্থান নিয়েছি। শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’
শিক্ষার্থীরা ‘বিচার চাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমাদের দাবি মানতে হবে’ নানা স্লোগান দিচ্ছেন। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পাশেই অতিরিক্ত পুলিশ অবস্থান নিয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার ঘাতক বাস দুটি জব্দ করেছে পুলিশ। ইতোমধ্যে বাসটির রেজিস্ট্রেশন সাময়িকভাবে বাতিল করেছে বিআরটিএ।গ্রেফতার করা হয়েছে বাসের এক চালককে।
দিনভর অবরোধের ঘটনায় ওই সড়কে যান চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। এতে অন্য সড়কগুলোতেও তীব্র যানজট দেখা দেয়।
উত্তাল সড়কের দুপাশেই অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সড়ক ছাড়বে না বলে ঘোষণা দেন তারা। আন্দোলনে আটকেপড়া সুপ্রভাত পরিবহনের একটি গাড়িতে আগুন ধরানো হলে শিক্ষার্থীরা পানি এনে আগুন নেভান। এ সময় আগুন লাগানোর অভিযোগে তারা একটি বাসের চালককে ধরে মারধর করেন।
দিনভর বিক্ষোভের পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে আন্দোলনকারীরা রাস্তা থেকে সরে গেলে ওই এলাকার যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে শিক্ষার্থীদের বহনকারী বিইউপির একটি বাস প্রগতি সরণিতে দাঁড়িয়েছিল। ওই বাসেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার কথা ছিল আবরারের।
বাসে ওঠার জন্য নিয়ম মেনেই জেব্রাক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন তিনি। ওই সময় পাল্লাপাল্লি করে আসা সুপ্রভাত পরিবহনের দুই বাসের মধ্যে চাপা পড়েন আবরার।
গুরুতর আহত আবরারকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দুর্ঘটনার পর নিহত আবরারের সহপাঠীরা বাসটি আটক করেন। এ সময় চালক ও হেলপার পালানোর চেষ্টা করেন। পরে চালক সিরাজুল ইসলামকে (২৯) ধরে ফেলেন শিক্ষার্থীরা।
তারা বাসচাপায় নিহত সহপাঠীর বিচার দাবিতে নানা স্লোগান দেন। উই ওয়ান্ট জাস্টিস/জেব্রাক্রসিংয়ে মৃত্যু কেন/টনক তুমি নড়বে কবে/কয়লার রাস্তা না রক্তের রাস্তা/নিজের সিরিয়ালের অপেক্ষা করুন/আর কত প্রাণ নিবি ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড নিয়ে তার সহপাঠীরা আন্দোলন করছেন।