Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ধুনটে শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে পরিবহনের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

রফিকুল আলম, ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ২২ মার্চ ২০১৯, ১২:৫৬ PM
আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৯, ১২:৫৬ PM

bdmorning Image Preview


বগুড়ার ধুনট উপজেলা প্রশাসন ও পরিবহন শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বিভিন্ন সামগ্রী পরিবহনের (ভটভটি) ভাড়ার ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৬০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ মার্চ ধুনট উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনে ভোটগ্রহণের জন্য ১টি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়নে ৮৯টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে আনছার ভিডিপি, পুলিশ সদস্য, ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপারসহ বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনী সামগ্রী পরিবহনের জন্য ১টি করে ভটভটি ভাড়া করা হয়। পৌর এলাকার পশ্চিম ভরনশাহী গ্রামের ফজলুল হক মিলন নামে এক শ্রমিক নেতার মাধ্যমে ৮৯টি ভটভটি সংগ্রহ করেন ইউএনও। 

সরকারিভাবে প্রতিটি ভটভটির জন্য ভাড়া বাবদ ৩ হাজার টাকা করে মোট ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ভোটের আগের দিন (১৭ মার্চ) ইউএনও অফিস থেকে নির্বাচনী সামগ্রীসহ আনছার ভিডিপি ও পুলিশ সদস্যরা ভটভটিযোগে কেন্দ্রে পৌছে। ওইদিন শ্রমিক নেতা ফজলুল হক মিলন ও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম রেজার মাধ্যমে ইউএনও অফিস থেকে প্রথম কিস্তিতে প্রত্যেক ভটভটি চালককে ৫০০ টাকা করে ভাড়া পরিশোধ করা হয়েছে। 

এছাড়া ভোটের পরের দিন (১৯ মার্চ) প্রতিটি ভটভটি ভাড়ার ৩ হাজার টাকা থেকে ১৫ শতাংশ আয়কর (ভ্যাট) এবং ১০ টাকা করে রেভিনিউ ষ্ট্যাম্পের মূল্য কর্তন করে অবশিষ্ট ২ হাজার ৪০ টাকা করে ফজলুল হক মিলনের হাতে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রত্যেক ভটভটি চালকের নামে ভাড়া বাবদ ২ হাজার ৫৪০ টাকা করে পরিশোধ করা হয়। 

এদিকে শ্রমিক নেতা ফজলুল হক মিলন তার সহযোগী ভোলা মীর ও আব্দুল মালেক নামে চেইন মাষ্টারের মাধ্যমে ভটভটি চালকদের দ্বিতীয় কিস্তিতে ৩০০ টাকা করে দিয়েছে। এতে ৮৯ জন ভটভটি চালক দুই কিস্তিতে ৮০০ টাকা করে হাতে পেয়েছে। দুই কিস্তিতে ৮৯ জন চালককে ভটভটি ভাড়ার ৭১ হাজার ২০০ টাকা পরিশোধ করে ফজলুল হক মিলন তার সহযোগীদের যোগসাজসে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৬০ টাকা আত্মসাৎ করেছে। 

উপজেলার শহড়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভটভটি চালক বাদশা মিয়া, ঝিনাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভটভটি চালক শাহীন আলম ও ধুনট মহিলা ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রের ভটভটি চালক কালু মিয়া জানান, সরকারিভাবে ৩ হাজার টাকা করে ভাড়া দেওয়ার কথা ছিল। কিন্ত গোসাইবাড়ি ষ্ট্যান্ডের চেইন মাষ্টার ভোলা মীরের মাধ্যমে তারা ৮০০ টাকা করে পেয়েছে। 

উপজেলার গোসাইবাড়ি বাজার ষ্ট্যান্ডের চেইন মাষ্টার ভোলা মীর বলেন, শ্রমিক নেতা ফজলুল হক মিলন দুই কিস্তিতে আমার মাধ্যমে ভটভটি চালকদের ৮০০ টাকা করে দিয়েছে। 

এ বিষয়ে শ্রমিক নেতা ফজলুল হক মিলন বলেন, ইউএনও অফিস থেকে প্রতিটি ভটভটির ভাড়া বাবদ ২ হাজার ৫৪০ টাকা করে উত্তোলন করে ধুনট শহর থেকে কেন্দ্রের দুরত্ব অনুযায়ী ৮০০ থেকে ১২'শ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। নিজের জন্য প্রত্যেক চালকের নিকট থেকে ৩০০ টাকা করে কেটে রেখেছি। তবে এই টাকার বড় অংশ থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনকে দিতে বাধ্য হয়েছি।

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, শ্রমিক নেতা ফজলুল হক মিলনের মাধ্যমে ৮৯টি ভটভটি সংগ্রহ করে দিয়েছে। চালকদের ভাড়া পরিশোধ করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। প্রত্যেক চালককে কত টাকা করে ভাড়া পরিশোধ করেছে তা আমার জানা নেই। 

ধুনট উপজেলা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, সব নিয়ম মেনেই শ্রমিক নেতা ফজলুল হক মিলনের কাছে প্রতিটি ভটভটির জন্য ২ হাজার ৫৪০ টাকা করে পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্ত ভটভটির ভাড়া আত্মসাতের বিষয়ে আমার কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেনি।
          


 

Bootstrap Image Preview