নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত বাংলাদেশি ওমর ফারুকের লাশ তার নিজ বাড়ি নারায়ণগঞ্জের বন্দরে দাফন করা হয়েছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) সকাল ১০টায় বন্দরের সিরাজউদৌলা ক্লাব মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বন্দরের উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলসহ এলাকার সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেয়।
জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ৫ বাংলাদেশির মধ্যে ওমর ফারুক ও জাকারিয়া ভূঁইয়ার মরদেহ বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।
এর পর স্বজনরা মরদেহ গ্রহণ করেন। এ সময় কফিন জড়িয়ে স্বজনদের আহাজারিতে বিমানবন্দর এলাকায় এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মৃত আবদুর রহমানের ছেলে ওমর ফারুক। ৩ বোনের একমাত্র ভাই। ছোটবোনের এখনও বিয়ে হয়নি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন ওমর ফারুক। সংসারে সচ্ছলতা আনতে প্রথমে গিয়েছিলেন সিঙ্গাপুরে। সেখানে কয়েক বছর কাটানোর পর দেশে এসে নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমান। সেখানে গত চার বছর ধরে থাকতেন। দুইবছর আগে দেশে এসে বিয়ে করেন। গত নভেম্বরে দেশে এসেছিলেন, ফিরে যান জানুয়ারিতে। তার স্ত্রী সানজিদা জামান নিহা তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে বন্দরের রাজবাড়ী এলাকায় নিজ বাড়িতে ওমর ফারুকের লাশ পৌঁছালে নিহা স্বামীর কফিন জড়িয়ে আহাজারি করছিলেন আর বলছিলেন, সন্তানের মুখ দেখার আগেই তুমি চলে গেলে। আমার সন্তান পৃথিবীতে এলে আমি তাকে কী বলব? কীভাবে বোঝাব।
ওমর ফারুকের ভগ্নিপতি সানোয়ার হোসেন বলেন, ওমর ফারুকের মা বয়স্ক, তিনি ডায়াবেটিসের রোগী। ওমর ফারুক প্রতিদিন দুবার করে মায়ের সঙ্গে কথা বলতেন। ছেলের এমন মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না মা। তিনি এখন পাগলপ্রায়।
উল্লেখ্য,গত ( ১৫ মার্চ) দুপুরে জুমার নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে ঢুকে সেমি অটোমেটিক রাইফেল দিয়ে নির্বিচারে গুলি চালান অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ব্রেন্টন টারেন্ট। এতে ৫০ জন নিহত হয়। এর মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশি।পুরো ঘটনাটি হেলমেটে বসানো ক্যামেরা দিয়ে ফেইসবুকে লাইভ করেন ব্রেন্টন টারেন্ট।